বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

| ১ কার্তিক ১৪৩২

ভলকার টুর্ক

 বাংলাদেশে আর যেন মানবাধিকার লঙ্ঘন না ঘটে, পদক্ষেপ নিতে হবে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক 

প্রকাশ: ১৬:২৪, ১৬ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ২০:৪১, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

 বাংলাদেশে আর যেন মানবাধিকার লঙ্ঘন না ঘটে, পদক্ষেপ নিতে হবে

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার টুর্ক বলেছেন, বাংলাদেশে আর যেন মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নিপীড়নের ঘটনা না ঘটে, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। বুধবার (১৫ অক্টোবর) জেনেভা থেকে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই আহ্বান জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে টুর্ককে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, আগের সরকারের আমলে গুম ও নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জবাবদিহির পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। প্রথমবারের মতো জোরপূর্বক গুমের অভিযোগে আনুষ্ঠানিক মামলা হয়েছে—যা নিহতদের এবং তাদের পরিবারের জন্য ন্যায়বিচারের পথে একটি তাৎপর্যপূর্ণ মুহূর্ত।

জাতিসংঘ জানায়, গত সপ্তাহে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ‘টাস্ক ফোর্স ফর ইনট্রোগেশন সেল’ ও ‘যৌথ জিজ্ঞাসাবাদ সেল’-এর বিরুদ্ধে জোরপূর্বক গুম ও নির্যাতনের সঙ্গে সম্পর্কিত দুটি মামলায় মানবতাবিরোধী অপরাধের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দিয়েছে। ট্রাইব্যুনাল বেশ কয়েকজন সাবেক ও কিছু কর্মরত সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে—যার মধ্যে ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক এবং র‍্যাবের সাবেক কর্মকর্তারাও রয়েছেন।

এছাড়া গত শনিবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ঘোষণা দিয়েছে, আগের প্রশাসনের আমলে সংঘটিত গুরুতর অপরাধের অভিযোগে এক ডজনেরও বেশি কর্মকর্তাকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে টুর্ক বলেন, `সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ ফৌজদারি কার্যক্রম নিশ্চিত করতে আটক ব্যক্তিদের দ্রুত বেসামরিক আদালতে হাজির করা জরুরি।‘
তিনি আরও বলেন, `আন্তর্জাতিক আইনে যথাযথ প্রক্রিয়া ও ন্যায্য বিচারের সর্বোচ্চ মান বজায় রাখতে হবে। একইসঙ্গে ভুক্তভোগী ও সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।‘

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গত বছর ছাত্রদের নেতৃত্বে বিক্ষোভের সময় মারাত্মক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার জবাবদিহি নিশ্চিতের সুপারিশ করেছিল জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান কমিশন। হাইকমিশনার টুর্ক বিপুলসংখ্যক মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, `যেসব মামলা আগের সরকারের সময় দায়ের হয়েছিল, সেগুলোতেও যথাযথ প্রক্রিয়া ও ন্যায্য বিচার নিশ্চিত করা দরকার। নির্বিচারে আটক থাকা ব্যক্তিদের মুক্তি দিতে হবে।‘

তিনি উল্লেখ করেন, জোরপূর্বক গুম থেকে বেঁচে ফেরা ব্যক্তিদের অনেকেই আগের সরকারের সমর্থক বা সাংবাদিক ছিলেন, যাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় মামলা হয়েছিল। এসব মামলায় যেন মৃত্যুদণ্ডের রায় না দেওয়া হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।

শেষে টুর্ক বলেন, `ব্যক্তিগত জবাবদিহি নিশ্চিতের পাশাপাশি বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার সর্বোত্তম পথ হলো সত্য বলা, ক্ষতিপূরণ, নিরাময় ও ন্যায়বিচারের একটি সমন্বিত প্রক্রিয়া। অতীতের মারাত্মক মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নিপীড়ন যেন পুনরায় না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে হবে।‘
 

আরও পড়ুন