৪২৮ লাখ মিটার জাল ও ৫৭.১ মেট্রিক টন ইলিশ জব্দ

এখন ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম। এমন অবস্থায় নদ-নদীতে মা ইলিশ রক্ষায় দেশব্যাপি অভিযান চলছে মৎস্য অধিদপ্তরের। মা ইলিশ সংরক্ষণ ও টেকসই আহরণের লক্ষ্যে এই অভিযান শুরু হয়েছে ৪ অক্টোবর, চলবে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত। ২২ দিনব্যাপী দেশের উপকূলীয় নদ-নদী, মোহনা ও সাগরসহ ৩৮ জেলার ১৭৮টি উপজেলায় অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অভিযানে বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, মৎস্য অধিদপ্তর এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, নিষিদ্ধ জাল ও ইলিশ জব্দ, জরিমানা এবং আইনি পদক্ষেপ গ্রহণসহ ব্যাপক তৎপরতা চালানো হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৫০৮৫টি অভিযান ও ১১৭৫টি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ১৩০১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আইন ভঙ্গের অপরাধে ১০৪৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং ৪২ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে-বলেও জানায় মন্ত্রণালয়।  

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, অভিযানে ৪২৮ লাখ মিটার জাল ও ৫৭.১ মেট্রিক টন ইলিশ জব্দ করা হয়েছে। জব্দ করা ইলিশ এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছে, আটক নিষিদ্ধ জালগুলো পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে এবং আটক নৌকা ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি নিলামে বিক্রি করে ৩১ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় জানায়, প্রতি বছরের মতো এ বছরও মা ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধকালে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ৩৮ জেলার ১৬৫টি উপজেলার ৬ লাখ ২০ হাজার ১৪০ জন জেলেকে ২৫ কেজি করে ১৫ হাজার ৫০৩ মেট্রিক টন ভিজিএফ চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। চাল এরই মধ্যে বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে।

অভিযান চলাকালে মেহেন্দিগঞ্জ, হিজলা, ভেদরগঞ্জ উপজেলায় একজন সহকারী কমিশনার (ভূমি) সহ মৎস্য অধিদপ্তরের দুইজন কর্মকর্তা, নৌ পুলিশের একজন সাব-ইন্সপেক্টর, তিনজন কনস্টেবলসহ মোট নয়জন সদস্য আহত হন। ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’- এর আওতায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনী ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান’ পরিচালনা করছে।

এরই মধ্যে চট্টগ্রাম মহানগর, কোম্পানীগঞ্জ, রায়পুর, হিজলা, শিবচর ও শ্রীনগর উপজেলায় সেনাবাহিনীর সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। গভীর সমুদ্রে দেশি-বিদেশি অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে যুদ্ধজাহাজ ও মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট দিয়ে সার্বক্ষণিক নজরদারি চালানো হচ্ছে।

এছাড়া আকাশপথে ইলিশ অধ্যুষিত জেলাসমূহের নদীসমূহে নজরদারির জন্য এ পর্যন্ত বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারের মাধ্যমে তিনটি অভিযান পরিচালিত হয়েছে। আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।