জনগণের মতামত ছাড়াই রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৪৩, ৫ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১৬:৫০, ৫ অক্টোবর ২০২৫

বিগত সরকারের আমলে রামপাল পাওয়ার প্ল্যান্ট জনগণের মতামত ছাড়াই নির্মিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি অভিযোগ করেন, প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বন মন্ত্রণালয়কে চাপ প্রয়োগ করে বনভূমি ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল।
রবিবার (৫ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর গুলশানে হোটেল লেক ক্যাসলে রিজনাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার মনিটরিং অ্যালায়েন্স কনফারেন্সে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এ অভিযোগ করেন।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন,“রামপাল পাওয়ার প্ল্যান্ট আলোচনা ছাড়া, জনগণের মতামত ছাড়াই হয়েছে। এমনকি সরকার বন মন্ত্রণালয়কে চাপ দিয়ে বনভূমি ছাড়তেও বাধ্য করেছে। এটাই কি গণতন্ত্র? আমরা কি ‘না’ বলার অধিকার হারিয়ে ফেলেছি?”
তিনি আরও বলেন, গত এক দশকে ঋণ, মুদ্রাস্ফীতি এবং ভুল বিনিয়োগের বোঝা জনগণের কাঁধে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা আজও শোধরানো হয়নি। জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়াই বিদেশি বিনিয়োগ আসায় দেশের পরিবেশ, বন ও নিরাপত্তা—সবই অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন,“আমাদের প্রয়োজন একটি শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো, যেখানে পরিবেশ, জনগণের অধিকার এবং জবাবদিহিতা সমান গুরুত্ব পাবে। আমরা উন্নয়ন চাই, কিন্তু শর্তহীন না।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আমরা বিদ্যুৎ চাই, কিন্তু পরিবেশ ধ্বংস করে নয়। আমরা বিনিয়োগ চাই, কিন্তু আমাদের কথার মূল্য দিয়ে।”
তার মতে, আজ বাংলাদেশ এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে, এবং প্রয়োজন একটি রূপান্তরমূলক এজেন্ডা, যেখানে জনগণ থাকবে কেন্দ্রে—না হলে এই উন্নয়ন একতরফা ও নিঃস্বার্থ হয়ে পড়বে।
পরিবেশ উপদেষ্টা আরও বলেন,“দেশে অবশ্যই বিদ্যুৎ প্রয়োজন, কিন্তু কখনোই পরিবেশ ধ্বংস করে নয়। বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও জনগণের চাহিদা ও মতামতের মূল্য দেওয়া উচিত। বিদেশি বিনিয়োগ তখনই টেকসই হয়, যখন তা জনগণের অংশগ্রহণ, স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতার সঙ্গে মিলে যায়—নয়তো তা শুধুই শোষণ।”
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন,“আমার চোখে বিনিয়োগ মানে শুধু টাকা নয়—এটা মানে ক্ষমতার কাছে যাওয়া, অথবা ক্ষমতা কার হাতে থাকবে তা নির্ধারণ করা। যারা ক্ষমতার বাইরে, তাদের কাছে এই উন্নয়ন মানে ভয় ও অনিশ্চয়তা।”