শীতে ‘উইন্টার ভমিটিং ডিজিজ’ : কীভাবে রক্ষা পাবেন
জীবনযাপন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮:১৭, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫
শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সর্দি-কাশি বা জ্বর নয়, বরং ঘরে ঘরে দেখা দিচ্ছে বমি, পেটখারাপ, আমাশয়, পেট ফাঁপা এবং দীর্ঘস্থায়ী হজমের ঝামেলা। রান্না করা খাবার খেলেও ঠিকমতো হজম হচ্ছে না—অনেকেই সারাদিন বমি ভাব, পেট ভার ও ক্ষুধামান্দ্য নিয়ে ভুগছেন।
চিকিৎসকদের মতে, এবারের শীতে সবচেয়ে দ্রুত বাড়ছে ‘উইন্টার ভমিটিং ডিজিজ’, যার মূল কারণ খাদ্যনালির ভাইরাসজনিত সংক্রমণ।
কেন বাড়ছে এই ‘উইন্টার ভমিটিং ডিজিজ’?
ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, ঋতুবদলের সময় বিভিন্ন ভাইরাসের বংশবৃদ্ধি দ্রুত হয়। সর্দিকাশির অ্যাডিনোভাইরাসের পাশাপাশি শ্বাসতন্ত্রে রাইনোভাইরাস, রেসপিরেটরি সিনসিটিয়াল ভাইরাস, ইনফ্লুয়েঞ্জা, সোয়াইন ফ্লু—সবই সক্রিয় হয়ে ওঠে।
এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরেকটি ঝুঁকি—নোরোভাইরাস সংক্রমণ এর প্রধান কারণ। রোটাভাইরাস সংক্রমণ হলো দীর্ঘমেয়াদি পেটের অসুখ
এই ভাইরাসগুলি খাবার বা পানির মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে ভাইরাল গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস তৈরি করে। এতে খাদ্যনালিতে তীব্র প্রদাহ দেখা দেয়, ফলে—খাবার ঠিকমতো হজম হয় না, পেট ব্যথা, বমি বা বমিভাব, পেটখারাপ , জ্বর , দুর্বলতা ও শরীর ভেঙে যাওয়া।
রোটাভাইরাস হলে সমস্যা একটানা ৫–৭ দিন স্থায়ী হতে পারে।
লক্ষণগুলো কী কী?
সারাদিন বমিভাব, কিছু খেলেই বমি, পেট ভার/আমাশয়, গ্যাস ও পেট ফাঁপা, পাতলা পায়খানা, খিদে কমে যাওয়া ও মাঝেমধ্যে হালকা জ্বর। এই উপসর্গ ৩–৭ দিন স্থায়ী হতে পারে।
কীভাবে রক্ষা পাবেন?
১. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সবচেয়ে জরুরি। রান্নাঘর, ডাইনিং টেবিল ও হাত ধোয়ার জায়গা পরিষ্কার রাখুন। বাসন মাজার জন্য পরিষ্কার জল ব্যবহার করুন। মুখ ধোয়া বা দাঁত ব্রাশের সময়ও পরিষ্রুত জল ব্যবহার করুন।
২. শুধু নিরাপদ পানি পান করুন। সবসময় ফোটানো, পরিস্রুত বা বোতলজাত পানি পান করুন। বাইরে থেকে পানি নেবেন না। পিউরিফায়ার থাকলে নিয়মিত পরিষ্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে।
৩. বাইরের খাবার সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলুন। পিৎজা, বার্গার, রোল-চাউমিনসহ সব প্রক্রিয়াজাত খাবার, রাস্তার তেলেভাজা, চপ, শরবত, লস্যি—সবই ঝুঁকিপূর্ণ। রঙিন শরবত বা রাস্তার জুস একেবারেই নয়অ
৪. খাবার সবসময় ঢেকে রাখুন: রান্না করা খাবার ঢেকে রাখুন যাতে মাছি বা পোকামাকড় বসতে না পারে। ফ্রিজে রাখা বাসি খাবার কম খান বা এড়িয়ে চলুন।
৫. শরীরে পানির ঘাটতি হতে দেবেন না। বমি ও ডায়েরিয়ায় দ্রুত পানি-লবণের ঘাটতি হয়। সারা দিনে কয়েকবার স্বাভাবিক পানি পান করুন
কবে চিকিৎসকের কাছে যাবেন?
২৪ ঘণ্টার বেশি বমি স্থায়ী হলে। বারবার পাতলা পায়খানা হলে। পেশার কমে গেলে।শিশুদের ক্ষেত্রে দ্রুত পানি-শূন্যতা দেখা দিলে। জ্বর না কমলে
