সঞ্চয়পত্রের ক্রেতা মারা গেলে নমিনী যেভাবে টাকা পাবেন
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯:৫১, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫
সঞ্চয়পত্রের ক্রেতা মারা গেলে টাকা কার হবে—এ প্রশ্ন প্রায়ই ওঠে। বিশেষ করে নমিনি পুরো টাকাই পাবেন কি না, মুনাফা তুলতে পারবেন কি না—এসব নিয়ে অনেকেরই বিভ্রান্তি থাকে। নিয়মটি আসলে খুবই সরল।
নমিনি কী পাবেন
ক্রেতা মারা গেলে নমিনি সঞ্চয়পত্রের সম্পূর্ণ টাকা ও জমা হওয়া মুনাফা পাবেন। তিনি প্রতি মাসের মুনাফাও নিয়মমতো তুলতে পারবেন।
কীভাবে টাকা তুলবেন—নমিনির করণীয়
সঞ্চয়পত্র ইস্যুকারী অফিসে নমিনিকে আবেদন করতে হবে। আবেদনপত্রের সঙ্গে কিছু প্রয়োজনীয় কাগজ দিতে হবে:
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
১. ইউনিয়ন পরিষদ/পৌরসভা/সিটি করপোরেশন থেকে পাওয়া মৃত্যুসনদ
২. প্রয়োজনে হাসপাতাল বা চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের মেডিকেল মৃত্যু সনদ
৩. নমিনির জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি
৪. নমিনির ২ কপি ছবি
৫. নমিনির নাগরিকত্ব সনদ
৬. নমিনির স্বাক্ষর সত্যায়ন
৭. নমিনির ব্যাংক হিসাবের MICR চেক পাতার কপি
মৃত্যুর পর সঞ্চয়পত্র চালু রাখা যায় কি?
হ্যাঁ। নমিনি চাইলে সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত চালু রাখতে পারবেন।
মেয়াদশেষে নগদায়ন করে নিজ নামে নতুন সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবেন।
তবে নমিনি নিজে মালিক হলেও ক্রেতার স্থানে নতুন নমিনি যুক্ত করতে পারবেন না—শুধু নতুন করে সঞ্চয়পত্র কিনলে তখন নমিনি নির্ধারণ করা যায়।
ক্রেতা ও নমিনি—দু’জনই মারা গেলে কী হবে?
এ ক্ষেত্রে আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উত্তরাধিকারীরা সঞ্চয়পত্রের টাকা পাবেন। আদালত যাদের বৈধ উত্তরাধিকার বলে চিহ্নিত করবে, তারাই মালিক হবেন।
বর্তমানে কত ধরনের সঞ্চয়পত্র আছে।
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের চার ধরনের সঞ্চয়পত্র চালু আছে—পরিবার সঞ্চয়পত্র, পেনশনার সঞ্চয়পত্র, পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র, পরিবার সঞ্চয়পত্র ছাড়া বাকি সব সঞ্চয়পত্রে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান উভয়েই বিনিয়োগ করতে পারে।
মেয়াদপূর্তির মুনাফার হার ১১.৭০% থেকে ১১.৯৮% এর মধ্যে।
মেয়াদ পূর্তির আগে সঞ্চয়পত্র ভাঙলে মুনাফা কমে যায়—তাই জরুরি প্রয়োজন ছাড়া আগে ভাঙা উচিত নয়।
একক নামের পাশাপাশি যৌথ নামে সঞ্চয়পত্র কেনার সুযোগও রয়েছে।
কেন এত জনপ্রিয় সঞ্চয়পত্র
নিরাপত্তা, স্থিতিশীল সুদহার এবং সরকারের গ্যারান্টি—এই তিন কারণে সঞ্চয়পত্র মধ্যবিত্তের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সঞ্চয়মাধ্যম হিসেবে জনপ্রিয়।
