দিনে মাত্র ১০ মিনিট হাসুন, বয়স কমবে!
জীবনযাপন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯:০৪, ২ ডিসেম্বর ২০২৫
অ্যান্টি-এজিং স্কিনকেয়ারের বাজার যতই বিস্তৃত হোক, বয়স কমানোর সবচেয়ে সহজ এবং প্রাকৃতিক উপায়টি হয়তো আপনার চোখের সামনেই—হাসি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিন মাত্র ১০ মিনিট আন্তরিকভাবে হাসা শরীর ও ত্বকের ওপর এমন ইতিবাচক প্রভাব ফেলে, যা ব্যয়বহুল ক্রিম বা সিরামও অনেক সময় দিতে পারে না। সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে, নিয়মিত হাসি ত্বকের জেল্লা বাড়াতে, স্ট্রেস কমাতে এবং বয়সের ছাপ দেরিতে আনতে দারুণভাবে কাজ করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, হাসি শরীরে ‘হ্যাপি হরমোন’—এন্ডোরফিন, ডোপামিন ও সেরোটোনিন—সক্রিয় করে। এসব হরমোন স্ট্রেস কমায়, মন ভাল রাখে এবং রক্তসঞ্চালন বাড়ায়। রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি পেলে ত্বকে অক্সিজেন ও প্রয়োজনীয় পুষ্টির সরবরাহ বাড়ে—ফলে ত্বক হয় আরও উজ্জ্বল, টাইট ও প্রাণবন্ত।
ত্বক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্ট্রেসই হলো অকাল বার্ধক্যের সবচেয়ে বড় শত্রু। স্ট্রেস বাড়লে শরীরে কর্টিসল বৃদ্ধি পায়, যা কোলাজেন ভেঙে ত্বককে ঢিলে করে দেয় এবং বলিরেখা ডেকে আনে। কিন্তু প্রতিদিন একটু খোলা মনে হাসলে কর্টিসল কমে, কোলাজেনের ক্ষয় ধীর হয়। এর ফলে মুখে বয়সের রেখা পড়ে দেরিতে।
হাসলে মুখ, গাল ও চোয়ালের পেশি স্বাভাবিকভাবে নড়ে—যা হালকা ফেস ওয়ার্কআউটের মতো কাজ করে। এতে মুখের পেশি দৃঢ় হয়, গাল টানটান থাকে এবং মুখে স্বাভাবিকভাবেই তরুণভাব বজায় থাকে।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন ১০–১৫ মিনিট আন্তরিকভাবে হাসেন, তাদের মানসিক চাপ কম থাকে, ঘুমের মান উন্নত হয় এবং ঘুম ভালো থাকলে ত্বক নিজেই মেরামত হয়। এর ফলে ত্বকে উঠে আসে স্বাভাবিক জৌলুস।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেন—শুধু হাসি বয়স থামিয়ে দেবে, এমনটি আশা করা ঠিক নয়।হাসি হলো ত্বক-স্বাস্থ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক অভ্যাস। এর পাশাপাশি—পর্যাপ্ত পানি পান, সুষম খাবার, নিয়মিত ব্যায়াম ও সঠিক ঘুম। এসব বজায় রাখলে ত্বক দীর্ঘসময় তরুণ ও উজ্জ্বল থাকে।
হাসি শুধু মনকে শান্ত করে না, শরীরে সৃষ্টি করে শক্তিশালী ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া। বয়সের ছাপ ধীর করা ও ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে হাসি সত্যিই একটি প্রাকৃতিক উপায়। দিনে মাত্র কয়েক মিনিট আন্তরিক হাসিও ত্বকের জন্য হতে পারে কার্যকর স্কিনকেয়ার টনিক।
অতএব, ব্যয়বহুল স্কিনকেয়ার থাকুক তার নিজের জায়গায়, তবে প্রতিদিনের জীবনে একটু হাসির চর্চা রাখতেই হবে—আপনার ত্বক ও মন দুটোই আপনাকে ধন্যবাদ দেবে।
