হালদা নদীতে ১২ বছরের ২০ কেজির কাতলা মাছের মৃত্যু, বিশেষজ্ঞদের মতে বার্ধক্যই কারণ
হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০:০২, ২৯ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ২০:১৩, ২৯ অক্টোবর ২০২৫
চট্টগ্রামের প্রাণ–নদী হালদা আবারও আলোচনায় — তবে এবার একটি বেদনাদায়ক ঘটনার কারণে। দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক রুই–জাতীয় মাছের প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী থেকে অর্ধগলিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে একটি বিশাল কাতলা মাছ। প্রায় ২৬ ইঞ্চি দীর্ঘ এই মাছটির ওজন ছিল প্রায় ২০ কেজি, বয়স আনুমানিক ১২ বছর।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে রাউজান উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. তোফাজ্জল হোসেন ফাহিম জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে মাছটি বার্ধক্যজনিত কারণে মারা গেছে। মাছটির শরীরে আঘাত বা বাহ্যিক ক্ষতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
এর আগে মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) রাত ১১টার দিকে হালদা নদীর আজিমের ঘাট এলাকায় মাছটি ভাসতে দেখে স্থানীয়রা মৎস্য বিভাগে খবর দেন। রাত সোয়া ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে কর্মকর্তারা মাছটির সুরতহাল সম্পন্ন করেন। শরীরের অর্ধেকেরও বেশি অংশ পচে যাওয়ায় অভ্যন্তরীণ অঙ্গ পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
তাদের ধারণা, মাছটি দুই-তিন দিন আগে মারা গেছে। সুরতহাল শেষে স্থানীয়দের সহায়তায় অর্ধগলিত মাছটি নদীর পাড়েই মাটিচাপা দেওয়া হয়।
হালদা নদীর গবেষক ও সংরক্ষণকর্মীরা বলছেন, এ ধরনের পরিণত বয়সের কাতলা নদীর প্রজনন চক্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই একটি বড় মাছের মৃত্যু হালদার জীববৈচিত্র্যের জন্য উদ্বেগের বিষয়। তারা মনে করছেন, নদীর পানির মান, অক্সিজেনের ঘাটতি এবং ক্রমবর্ধমান দূষণ এসব মৃত্যুর পেছনে দায়ী হতে পারে।
হালদা নদী বাংলাদেশের গর্ব — এখানে প্রাকৃতিকভাবে রুই, কাতলা, মৃগেল ও কালবাউসের মতো মাছ ডিম ছাড়ে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নদীর দূষণ ও অনিয়ন্ত্রিত চলাচলের কারণে এ অঞ্চলের পরিবেশ ও মাছের বংশবৃদ্ধি মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়েছে।
