বিএনপির সাবেক প্রতিমন্ত্রীর ছেলে যোগ দিলেন আওয়ামী লীগে

কিশোরগঞ্জ সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জিয়াউর রহমান সরকারের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী (১৯৭৮–১৯৮২ মেয়াদ) ডা. ফজলুর করিমের ছেলে, সাবেক বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট ফয়জুল করিম মুবিন আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। বুধবার বিকাল থেকে এ খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

অ্যাডভোকেট ফয়জুল করিম মুবিন নিজ নামের ফেসবুক পেজ ‘Adv. Faizul Karim Mubin’ থেকে বুধবার বিকেলে সরাসরি লাইভে এসে নিজের অবস্থান জানান। দুই মিনিটের ওই ভিডিও বক্তব্যে তিনি বলেন—‘শেখ হাসিনা যেহেতু বলেছেন, তিনি অবশ্যই দেশে ফিরবেন। আমি রাজনীতি করেছি দেশের জন্য, দলের জন্য নয়। এখন মনে করছি, দেশের নেতৃত্বে শেখ হাসিনার প্রয়োজন।’

পেজটির প্রোফাইল ছবি ও ব্যানারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি, সঙ্গে আওয়ামী লীগের লোগো ও বাংলাদেশের পতাকা যুক্ত রয়েছে। জানা গেছে, পেজটি নিজেই পরিচালনা করেন মুবিন।

লাইভে তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতি এখন নতুন এক অধ্যায়ে প্রবেশ করছে। শেখ হাসিনা শুধু আওয়ামী লীগের নয়, তিনি এই দেশের স্থিতিশীলতার প্রতীক। দেশ ও জনগণের স্বার্থে এখন ঐক্যের সময়।’

এর আগের দিন (২১ অক্টোবর) একই পেজে তিনি লাইভে এসে বলেন, ‘শেখ হাসিনার পক্ষে আমি অ্যাডভোকেট ফয়জুল করিম মুবিন, কিশোরগঞ্জ থেকে জুলাই সনদের তীব্র বিরোধিতা করছি।’

অ্যাডভোকেট ফয়জুল করিম মুবিন দীর্ঘদিন ধরে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি জেলা বিএনপির উপ–দপ্তর সম্পাদক, পৌর বিএনপির সদস্য এবং জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কিশোরগঞ্জ শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

চলতি বছরের ২০ সেপ্টেম্বর জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পর ৫ অক্টোবর তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে বিএনপি থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

চরম রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার সময় আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন— ‘আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের দল, ধর্মনিরপেক্ষ দেশপ্রেমিক নেতৃত্ব। ৫ আগস্টের পর মানুষ যে পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখেছিল, তা ভেস্তে যেতে বসেছে। রাষ্ট্র সংস্কারের নামে সম্পদ ভোগের প্রবণতা বেড়েছে। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে ক্ষমতায় বসানোর ষড়যন্ত্র চলছে। একে প্রতিহত করতেই আমি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছি। শেখ হাসিনাই প্রকৃত দেশপ্রেমিক, বাংলাদেশের মানুষের একমাত্র আশ্রয়স্থল।’

তবে তিনি কীভাবে বা কার মাধ্যমে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপিতে এখন মুবিনের কোনো পদ নেই। তাছাড়া তার মানসিক অবস্থাও ঠিক নেই। তাই তার আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার কোনো রাজনৈতিক গুরুত্ব নেই।’