ব্যাংকে কত টাকা রাখলে কাটা হবে আবগারি শুল্ক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯:০৩, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

ব্যাংকে টাকা রাখলেই এখন আর সবাইকে আবগারি শুল্ক দিতে হবে না। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো ব্যাংক হিসাবের স্থিতি (ব্যালান্স) বছরে অন্তত একবার তিন লাখ টাকার বেশি হলে তবেই শুল্ক কাটা হবে। আগে এই সীমা ছিল এক লাখ টাকা। ফলে সাধারণ গ্রাহকদের জন্য কিছুটা স্বস্তি এসেছে।
এই পরিবর্তন কার্যকর হয়েছে চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার পর থেকেই। সাধারণত ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের মোবাইলে অর্থ কেটে নেওয়ার বার্তা পাঠায়।
আবগারি শুল্ক কী?
আবগারি শুল্ক হলো একধরনের পরোক্ষ কর, যা সরকার নির্দিষ্ট কিছু পণ্য, সেবা বা আর্থিক কার্যক্রমের ওপর ধার্য করে। এটি আয়ের ওপর নয়, বরং নির্দিষ্ট লেনদেন বা সুবিধা ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। যেমন—
ব্যাংকে টাকা রাখা,মোবাইলে কথা বলা,সিগারেট কেনা ইত্যাদি।
অর্থাৎ, বছরে অন্তত একবার যদি আপনার ব্যাংক হিসাবে তিন লাখ টাকা বা তার বেশি থাকে, তাহলে সেই হিসাবে আবগারি শুল্ক দিতে হবে।
কত টাকা থাকলে কত শুল্ক দিতে হবে
হিসাবের সর্বোচ্চ স্থিতি আবগারি শুল্কের পরিমাণ
- ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত কোনো শুল্ক নয়
- ৩ লাখ ১ টাকা–৫ লাখ টাকা ১৫০ টাকা
- ৫ লাখ ১ টাকা–১০ লাখ টাকা ৫০০ টাকা
- ১০ লাখ ১ টাকা–৫০ লাখ টাকা ৩,০০০ টাকা
- ৫০ লাখ ১ টাকা–১ কোটি টাকা ৫,০০০ টাকা
- ১ কোটি ১ টাকা–২ কোটি টাকা ১০,০০০ টাকা
- ২ কোটি ১ টাকা–৫ কোটি টাকা ২০,০০০ টাকা
- ৫ কোটি টাকার বেশি ৫০,০০০ টাকা
কীভাবে কাটা হয়
জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে আপনার হিসাবে কোনো সময় স্থিতি যদি নির্ধারিত সীমা স্পর্শ করে, তাহলে নির্দিষ্ট হারে শুল্ক কাটা হবে। একাধিকবার সীমা স্পর্শ করলেও বছরে একবারই কাটা হয়।
তবে আপনার একাধিক ব্যাংক হিসাব থাকলে— প্রতিটি হিসাব আলাদা করে শুল্কের আওতায় আসবে। যেমন, তিনটি ব্যাংকে যদি ৪ লাখ টাকা করে থাকে, তাহলে প্রত্যেকটি হিসাব থেকে ১৫০ টাকা করে মোট ৪৫০ টাকা কাটা হবে।
সাধারণত ডিসেম্বরের শেষ কার্যদিবসে এই টাকা কাটা হয়, কখনো জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেও হতে পারে।
কোন কোন হিসাব থেকে শুল্ক কাটা হয়
আবগারি শুল্ক বসে প্রায় সব ধরনের ব্যাংক হিসাবের ওপর—সঞ্চয়ী হিসাব, চলতি হিসাব, স্থায়ী আমানত (এফডিআর), ডিপোজিট পেনশন স্কিম (ডিপিএস)
ও বেতনভিত্তিক হিসাব।
কেন এই শুল্ক আরোপ করা হয়
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ব্যাংকের মাধ্যমে এই শুল্ক আদায় করে এবং সরকারি কোষাগারে জমা দেয়। সরকারের যুক্তি অনুযায়ী, আবগারি শুল্কের উদ্দেশ্য হলো—
রাজস্ব আহরণের উৎস বাড়ানো,উচ্চ আয়ের করদাতাদের করজালে আনা,ব্যাংক লেনদেনে স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা এবং কর প্রশাসন সহজ করা।