আগামী বছর ২৮ লাখ টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির সিদ্ধান্ত সরকার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৮:২৪, ২২ অক্টোবর ২০২৫

পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ছবি : সংগৃহীত
রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে ও জনস্বার্থে ২০২৬ সালের জন্য ২৮ লাখ ৫ হাজার মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বুধবার অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে, যেখানে সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) আগামী বছর জি-টু-জি ভিত্তিতে (Government to Government) ৮টি দেশের ১০টি প্রতিষ্ঠান থেকে এই তেল আমদানি করবে।
তেলের ধরন ও আমদানির পরিমাণ
বিক্রয় প্রবণতা ও মজুদের ওপর ভিত্তি করে ২০২৬ সালের আমদানির কাঠামো নির্ধারণ করা হয়েছে—
গ্যাস অয়েল: ১৯ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন
জেট এ–১: ৩ লাখ ৯০ হাজার মেট্রিক টন
গ্যাসোলিন (অকটেন): ১ লাখ ৭৫ হাজার মেট্রিক টন
ফার্নেস অয়েল: ৩ লাখ মেট্রিক টন
মেরিন ফুয়েল: ৩০ হাজার মেট্রিক টন
মোট পরিশোধিত জ্বালানি তেল হবে ২৮ লাখ ৫ হাজার মেট্রিক টন, যা পাবলিক প্রোকিউরমেন্ট অ্যাক্ট (পিপিএ) ২০০৬ এর ৬৮(১) ধারা এবং পিপিআর ২০০৮ এর বিধি ৭৬(২) অনুযায়ী সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে আমদানি করা হবে।
ই-পাসপোর্ট প্রকল্পেও নতুন অনুমোদন
বৈঠকে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে—‘বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা প্রবর্তন’ প্রকল্পে নতুন কাঁচামাল ও বুকলেট কেনার।
এর আওতায়:
১ কোটি ই-পাসপোর্ট কাঁচামাল
উন্নত বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ৫৭ লাখ বুকলেট সুয়াপ
প্রশিক্ষণ কার্যক্রম
সবই সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কেনা হবে জার্মানির ভেরিডোস জিএমবিএইচ প্রতিষ্ঠান থেকে, যারা বর্তমানে প্রকল্পটির সেবা প্রদান করছে।
? চুক্তির আর্থিক কাঠামো ও সময়সীমা
প্রস্তাবিত ক্রয় বাবদ ব্যয় হবে ১ হাজার ৬৯২ কোটি ৩২ লাখ ৭৬ হাজার টাকা।
প্রকল্পের মেয়াদ: ২০১৮ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত।
মূল চুক্তির তুলনায় নতুন হারে প্রস্তাব করা হয়েছে:
পাসপোর্ট বুকলেট: ৮.৫৪০ ইউরো (আগে ছিল ৭.৩৫৯ ইউরো)
কাঁচামাল: ৬.৯৮০ ইউরো (আগে ছিল ৫.৯৯০ ইউরো)
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, এ ধরনের প্রযুক্তি নির্ভর সেবা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে নিলে জটিলতা তৈরি হতে পারে, তাই সরাসরি ক্রয়ই সর্বোত্তম সমাধান।
জ্বালানি আমদানির এই পদক্ষেপটি ২০২৬ সালের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা। অন্যদিকে, ই-পাসপোর্ট প্রকল্পের নতুন চুক্তি বাংলাদেশের সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে আরও আধুনিক ও স্বয়ংক্রিয় করতে সহায়তা করবে।