একনেকে ১৩ প্রকল্প অনুমোদন, ব্যয় প্রায় ১ হাজার ৯৮৮ কোটি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৭:০২, ২১ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১৭:৪১, ২১ অক্টোবর ২০২৫

বাংলাদেশের উন্নয়নযাত্রায় আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ যোগ হলো আজ। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) মঙ্গলবার মোট ১৩টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে প্রায় ১ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকা।
এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে ১ হাজার ৮৮৫ কোটি ৭ লাখ টাকা, বৈদেশিক ঋণ হিসেবে আসবে ৫৩ কোটি ২ লাখ টাকা, এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় হবে ৫০ কোটি টাকা।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
গ্রামীণ অবকাঠামো ও কৃষি খাতে গুরুত্ব
একনেক বৈঠকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘রেজিলিয়েন্স স্ট্রেংদেনিং থ্রো অ্যাগ্রি-ফুড সিস্টেম ট্রান্সফরমেশন’—যার লক্ষ্য কৃষি ও খাদ্যব্যবস্থায় টেকসই রূপান্তর আনা। একইসঙ্গে খুলনা বিভাগে পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পও অনুমোদন পেয়েছে, যা গ্রামীণ মাটির রাস্তা ও ক্ষুদ্র সেতু সংস্কারে নতুন দিগন্ত খুলবে।
নগর উন্নয়ন ও নাগরিক সুবিধা
নগরাঞ্চলের উন্নয়নে অনুমোদন পেয়েছে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। এর মধ্যে রয়েছে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১–৫ নম্বর জোনে অভ্যন্তরীণ রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ প্রকল্প, উত্তরা লেক উন্নয়ন প্রকল্প,জামালপুর শহরের নগর স্থাপত্য পুনঃসংস্কার ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উন্নয়ন প্রকল্প। এগুলোর মাধ্যমে নগর জীবনে পরিবেশবান্ধব ও টেকসই অবকাঠামো গড়ে তোলার প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য, রেলওয়ে ও আন্তর্জাতিক উপস্থিতি
গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যখাতে রয়েছে ‘পাবনা মানসিক হাসপাতালকে আন্তর্জাতিকমানের মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে রূপান্তর’ প্রকল্প। এতে দেশেই মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় আন্তর্জাতিক মানের সুবিধা পাওয়া যাবে। রেলওয়ের নিরাপত্তা ও দক্ষতা বাড়াতে পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলে লেভেল ক্রসিং গেটগুলোর পুনর্বাসন ও মানোন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। এছাড়া বিদেশে বাংলাদেশের উপস্থিতি জোরদারে অনুমোদন পেয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় বাংলাদেশ চ্যান্সারি ভবন নির্মাণ প্রকল্প।
শিল্প ও জ্বালানি খাতে সম্প্রসারণ
বিএসটিআইয়ের পদার্থ ও রসায়ন পরীক্ষণ ল্যাবরেটরি সম্প্রসারণের মাধ্যমে দেশীয় শিল্পের গুণমান নিশ্চিতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হবে। একই সঙ্গে ঘোড়াশাল তৃতীয় ইউনিট রি-পাওয়ারিং প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে, যা বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা আরও বাড়াবে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো সরকারের চলমান উন্নয়ন ও রূপান্তর প্রচেষ্টারই প্রতিফলন। গ্রামীণ যোগাযোগব্যবস্থা, কৃষি, স্বাস্থ্য, রেল ও নগর উন্নয়ন—সব ক্ষেত্রেই সমন্বিতভাবে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও নাগরিক জীবনমান আরও সমৃদ্ধ হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।