সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা
নির্বাচনী ইশতেহারে শ্রমিক নিরাপত্তার অঙ্গীকার থাকতে হবে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২:৩৭, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস) ও শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহারে শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়ে অঙ্গীকার রাখার দাবি জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেছেন, নির্বাচনী ইশতেহারে যেন শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইন ও বৈষম্য দূর করার কথা থাকে। শ্রমিকদের জন্য নিরাপত্তা তহবিল গঠনের পাশাপাশি শ্রমিক নিরাপত্তা যাতে উপেক্ষিত না থাকে, সে জন্য দলগুলোকে জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
দেশে অব্যাহত রাসায়নিক ও অগ্নিকাণ্ডসহ সব ধরনের দুর্ঘটনার তদন্ত ও বিচার, নিহত-আহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন, দুর্ঘটনা প্রতিরোধ সেফটি কমিটি গঠন, আইন সংশোধন এবং শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবিতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন বিলসের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি ঘটে যাওয়া তিনটি অগ্নিকাণ্ডের প্রতিটি ঘটনায় রাসায়নিক সম্পৃক্ততা রয়েছে। বিষয়টি সামনে রেখে ভবিষ্যতে আমাদের কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। সর্বোপরি শ্রমিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং আইনি ব্যবস্থার সঠিক প্রয়োগ থাকতে হবে।’
মিরপুরে আগুন লাগা কারখানায় অনেক নিয়ম লঙ্ঘন হয়েছে বলে অভিযোগ করেন একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির। তিনি বলেন, ‘সেখানে কর্মরত অনেকের বয়স ১৪-১৫ বছর। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি কারখানার সব তলায় ‘সেফটি সেল (নিরাপত্তা শাখা)’ নিশ্চিত করার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত বা নিহত শ্রমিক পরিবারের অধিকার নিশ্চিতে গুরুত্ব দিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন সেফটি অ্যান্ড রাইটস সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক সেকেন্দার আলী। তিনি বলেন, রাসায়নিক কারখানা আবাসিক এলাকায় কোনোভাবেই রাখা উচিত নয়।
শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকারের কাছে বেশ কয়েকটি সুপারিশ প্রস্তাব করেন আয়োজকেরা। এর মধ্যে রয়েছে- ১. কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে এবং রাসায়নিক দ্রব্য মজুতে আন্তর্জাতিক আইন ও বিধিবিধানের কঠোর প্রয়োগ। ২. দেশের শ্রম আইন, বিস্ফোরক আইন, বয়লার আইন ও পরিবেশ আইন যুগোপযোগী ও হালনাগাদ করা। ৩. প্রতিটি দুর্ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন জনসমক্ষে প্রকাশ, শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে সরকার কর্তৃক কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ এবং জাতীয় শিল্প, স্বাস্থ্য ও সেফটি কাউন্সিলকে সক্রিয় করে নিরাপত্তা উন্নয়নকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া প্রভৃতি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক পরিচালক ও রাসায়নিক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ আবুল বাশার মিয়া, কর্মজীবী নারীর অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক সানজিদা সুলতানা, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য পরিষদের (জিস্কপ) প্রতিনিধি নাইমুল আহসান, শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সমন্বয়কারী আবদুল কাদের হাওলাদার প্রমুখ।