ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষায় যুক্ত হচ্ছে ফ্রান্সের একশত রাফাল
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮:৩৪, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সাথে ক্রয়চুক্তিতে সই করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ছবি: সংগৃহীত
রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নিজেদের আকাশ প্রতিরক্ষা আরও শক্তিশালী করতে বড় পদক্ষেপ নিয়েছে ইউক্রেন। এবার দেশটির বহরে যুক্ত হতে যাচ্ছে ফ্রান্সের উন্নতমানের একশটি রাফাল যুদ্ধবিমান। প্যারিসে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সাথে বৈঠকে সোমবার (১৭ নভেম্বর) এই ক্রয়চুক্তিতে সই করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। খবর—রয়টার্স।
রাশিয়ার সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোর হামলা—ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও জাপোরিজ্জিয়া ফ্রন্টে পদাতিক অগ্রযাত্রা—ইউক্রেনকে আরও আক্রমণাত্মক ও শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দিকে ঠেলে দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ফরাসি সমর্থনকে কিয়েভ একটি ‘টার্নিং পয়েন্ট’ হিসেবে দেখছে।
ফরাসি রাষ্ট্রপ্রধানের কার্যালয় চুক্তিটি নিশ্চিত করেছে। প্যারিসের ভিলাকুবলে সামরিক ঘাঁটিতে একটি রাফাল জেটের সামনে দাঁড়িয়ে দুই প্রেসিডেন্টের সইয়ের দৃশ্য টিভি ফুটেজে দেখা যায়, যেখানে ‘ফরাসি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম’ সরবরাহের একটি ঐক্য চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন তারা।
যদিও যুদ্ধবিমানগুলো কখন হাতে আসবে বা কীভাবে সরবরাহ হবে—তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি।
রয়টার্সকে অবগত দুই সূত্র জানিয়েছে—রাফাল সরবরাহ ১০ বছরের একটি বৃহৎ কৌশলগত বিমান-চুক্তির অংশ, যার লক্ষ্য ইউক্রেনের যুদ্ধবিমান বহরকে দীর্ঘমেয়াদে ২৫০ বিমানে উন্নীত করা।
এই পরিকল্পনায় যুক্ত রয়েছে—যুক্তরাষ্ট্রের এফ–১৬,সুইডেনের গ্রিপেন এবং এখন ফ্রান্সের রাফাল।
ফরাসি মজুত থেকে কিছু রাফাল দ্রুত পাঠানো হতে পারে, বাকিগুলো দীর্ঘমেয়াদি উৎপাদন ও সরবরাহ কাঠামোর মাধ্যমে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
পাইলট প্রশিক্ষণে লাগবে সময়
রাফাল পরিচালনা করতে পাইলটদের উচ্চমানের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। তাই সরবরাহ শুরুর পরও সম্পূর্ণ সক্ষমতা অর্জনে সময় লাগবে বলে জানিয়েছে প্যারিস। তবে ফ্রান্স নিশ্চিত করেছে—তাদের প্রতিরক্ষা শিল্পকে ইউক্রেনের নিরাপত্তায় ব্যবহার করতে পুরোপুরি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তারা।
আরও সহায়তার সম্ভাবনা
জেলেনস্কির এ সফরে আরও চুক্তি হতে পারে—
উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা,
অ্যাস্টার–৩০ ক্ষেপণাস্ত্র,
অ্যান্টি–ড্রোন প্রযুক্তি,
এবং অতিরিক্ত মিরাজ জঙ্গিবিমান সরবরাহের বিষয়ে।
তবে এই বিস্তৃত চুক্তিগুলোর অর্থায়ন কীভাবে হবে—তা এখনো পরিষ্কার নয়।
ফ্রান্স–ব্রিটেনের নেতৃত্বে নতুন জোট
ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য প্রায় ৩০টি দেশ নিয়ে একটি বড় আন্তর্জাতিক জোট তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। রাশিয়ার সাথে সম্ভাব্য শান্তিচুক্তির পরেও যাতে ইউক্রেনের সীমান্তে নিরাপত্তা বজায় থাকে এবং ভবিষ্যতের আগ্রাসন ঠেকানো যায়—এটাই এই জোটের লক্ষ্য।
এই জোট ভবিষ্যতে—ইউক্রেন, অথবা ইউক্রেনের পশ্চিম সীমান্তে নিরাপত্তা বাহিনী ও সামরিক সরঞ্জাম পাঠাতে পারে।
