নির্বাচন ঘিরে ব্যস্ত ইসি, সমন্বয়ের টেবিলে দুই ডজন চ্যালেঞ্জ
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯:৩৪, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) এবার বসছে একটি ব্যস্ত সূচি নিয়ে। ভোট আয়োজনকে নির্বিঘ্ন ও নিরপেক্ষ করতে প্রায় দুই ডজন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তাদের কর্মতালিকায়। এ উদ্দেশ্যে শিগগিরই একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় বসছে ইসি, যেখানে বিভিন্ন দপ্তরের সহযোগিতা নিশ্চিত করা হবে।
ইসির সূত্রে জানা গেছে, ভোট আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত সব দিক পর্যালোচনায় থাকবে এই বৈঠকের মূল লক্ষ্য। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষার সময়সূচি যাতে ভোটের তারিখের সঙ্গে না মিলে যায়, সেদিকেও গুরুত্ব দেওয়া হবে। কারণ ভোটকেন্দ্র হিসেবে এসব প্রতিষ্ঠান ব্যবহৃত হয়, ফলে পরীক্ষার সময়সূচি ও নির্বাচনী প্রস্তুতি একইসঙ্গে চললে প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি হতে পারে।
এছাড়া বৈঠকে আলোচনায় আসবে ভোটের সময়কার আবহাওয়া পরিস্থিতি, যাতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কোনো এলাকা বিচ্ছিন্ন না হয়ে পড়ে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে ভোটের সম্ভাব্য সময় ঘিরে পূর্বাভাসও নেয়া হবে বলে জানা গেছে।
আরেকটি বড় আলোচ্য বিষয় হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির অপব্যবহার। নির্বাচন ঘিরে ভুয়া তথ্য, বিভ্রান্তিকর ভিডিও বা ডিজিটাল প্রভাব বিস্তারের সম্ভাবনা ঠেকাতে ইসি ইতিমধ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগকে সক্রিয়ভাবে যুক্ত করার পরিকল্পনা করেছে।
পোস্টাল ভোটিং ব্যবস্থার সম্প্রসারণ, ভোটকর্মী প্রশিক্ষণ, নিরাপত্তা বাহিনীর মোতায়েন, ভোটকেন্দ্রে বিদ্যুৎ সরবরাহের নিশ্চয়তা এবং ব্যালট ও ইভিএম সরঞ্জাম পরিবহনের নিরাপত্তা নিয়েও থাকবে আলোচনা। বিশেষ করে বিদ্যুৎ বিভাগ, পুলিশ, স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা সভায় অংশ নেবেন বলে জানা গেছে।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, ভোটের প্রস্তুতি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। প্রতিটি দিক সমন্বিতভাবে সম্পন্ন করতে এই আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কমিশন আশা করছে, আগাম পরিকল্পনা ও কার্যকর সমন্বয়ের মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হবে।
ভোটের সময় ঘোষণা না হলেও ইসি সূত্র ইঙ্গিত দিয়েছে, নির্বাচনকালীন প্রশাসনিক প্রস্তুতি নভেম্বরের মধ্যেই প্রায় শেষ হয়ে যাবে। এরপর শুরু হবে মাঠপর্যায়ে কাজ বাস্তবায়নের ধাপ।
এই বৈঠক থেকেই মূলত নির্ধারিত হবে, নির্বাচনের দিন দেশের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তর, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার কাজ কীভাবে ভাগ করা হবে—এবং কে কোন দায়িত্ব পালন করবে।
নির্বাচন কমিশনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, 'এই বৈঠকটি হলো নির্বাচনের প্রস্তুতির হৃদপিণ্ড। এখান থেকেই নির্ধারিত হবে কে কখন, কোথায় এবং কীভাবে কাজ করবে।'
