মানবতাবিরোধী অপরাধ
শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের মৃত্যুদণ্ড চাইলেন চিফ প্রসিকিউটর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪:৫৮, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

২০২৪ সালের জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের মৃত্যুদণ্ডের আবেদন করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে তিনি এই আবেদন জানান। এ মামলায় মোট তিনজন আসামির মধ্যে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রুভার) হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছেন এবং নিজের দোষ স্বীকার করেছেন।
প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম ট্রাইব্যুনালে বলেন, “শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময় রাষ্ট্রীয় শক্তি ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের ওপর নৃশংস হামলা চালাতে নেতৃত্ব দেন। এই অপরাধ আন্তর্জাতিক আইনে গণহত্যা, হত্যাকাণ্ড ও নিপীড়নের মধ্যে পড়ে।”
তিনি আরও বলেন, রাজসাক্ষী চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ‘ঘটনার পূর্ণ সত্য’ প্রকাশ করেছেন। এখন তার বিষয়ে ট্রাইব্যুনাল সিদ্ধান্ত নেবে।
শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান বর্তমানে পলাতক। তাদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন সময় চেয়ে আবেদন করেন যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য। আদালত আগামী সোমবার (২০ অক্টোবর) থেকে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট, কয়েক মাস ধরে চলা রাজনৈতিক অস্থিরতার চূড়ান্ত পরিণতিতে ঘটে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান, যেখানে ব্যাপক জনসম্পৃক্ততা ও সংঘাতের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। সেই সময়ের ঘটনাগুলো নিয়ে পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তদন্ত শুরু করে।
এ মামলায় অভিযোগ রয়েছে যে- সরকারি বাহিনীকে ব্যবহার করে বেসামরিক জনগণের ওপর হামলা চালানো হয়, নির্বিচারে গুলিবর্ষণ ও গুমের ঘটনা ঘটে এবং সংবিধান ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন হয়।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ এই মামলার বিচার চলছে। এই ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।