কক্সবাজার সৈকতের বালিয়াড়ি থেকে দোকান উচ্ছেদ শুরু
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬:৩৬, ১২ অক্টোবর ২০২৫

কক্সবাজার সৈকতের বালিয়াড়ি দখল করে বসানো অর্ধশত দোকানপাট ও স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে জেলা প্রশাসন।
রবিবার বেলা ১১ টা থেকে দুপুর ৩ টা পর্যন্ত সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে এ অভিযান চালানো হয়েছে।
এসময় উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনার জন্যে সুগন্ধা পয়েন্ট সৈকত এলাকায় বিপুল সংখ্যক সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশের সদস্য মোতায়েন করা হয়। পাশাপাশি উচ্ছেদের জন্য আনা হয় একটি এক্সেভেটর।
এর আগে শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও অংশীজনদের সঙ্গে এক জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় গৃহিত সিদ্ধান্ত মতে, সৈকতের বালিয়াড়িতে নতুন করে বসানো স্থাপনা ১১ অক্টোবর রাতের মধ্যে এবং পুরাতন স্থাপনা আগামী ১৬ অক্টোবরের মধ্যে সরানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়।
কক্সবাজারের সদ্য যোগদান করা জেলা প্রশাসক মো. আ. মান্নানের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সৈকতের পরিবেশ ও প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা থেকে সব ধরণের স্থাপনা উচ্ছেদে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে সভায় অবহিত করা হয়।
অভিযানে অংশ নেওয়া ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক ( এডিআইজি ) আপেল মাহমুদ বলেন, জেলা প্রশাসনের নির্দেশে সৈকতের বালিয়াড়ি দখল বসানো অন্তত ৫০ টি দোকানপাট ও স্থাপনা অভিযান চালিয়ে উচ্ছেদ করা হয়। এর আগে দুপুর ২ টার মধ্যে মালিকদের স্ব স্ব স্থাপনা সরিয়ে নিতে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু স্থাপনাগুলো নিজেরা সরিয়ে না নেওয়ায় অভিযান চালিয়ে উচ্ছেদ করা হয়েছে।
সৈকতের বালিয়াড়ি দখল করে বসানো কোন ধরণের স্থাপনা প্রশাসনের নির্দেশনা মোতাবেক উচ্ছেদ করা হবে বলে জানান তিনি।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, সৈকতের বালিয়াড়ি দখল করে বসানো স্থাপনা শনিবার (১১ অক্টোবর) রাতের মধ্যে সরানোর জন্য প্রশাসন নির্দেশনা জারি করে। কিন্তু রবিবার দুপুর পর্যন্ত বেশ কিছু স্থাপনা বালিয়াড়ি থেকে না সরানোয় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, গত এক বছরে কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক, সুগন্ধা, কলাতলী, দরিয়ানগর, হিমছড়ি, সোনারপাড়া, ইনানী,পাটুয়ারটেক ও টেকনাফ সৈকতে কয়েকশ দোকান-পাট ও স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে। সৈকতের জনপ্রিয় পর্যটন স্পটগুলোতে বেশি দখলের ঘটনা ঘটছে।
এর মধ্যে গতমাসে বিদায়ী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনের বদলী আদেশ আসার পর পরই সুগন্ধা পয়েন্ট সৈকতে শতাধিক টংঘর বানিয়ে বসানো হয়। পাশাপাশি সৈকতের অন্যান্য পয়েন্টেও বসেছে ভ্রাম্যমান দোকান পাট। সৈকতের প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকায় এসব স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ উঠে।
কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ১২০ কিলোমিটার সমুদ্রসৈকত ১৯৯৯ সালে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা(ইসিএ)ঘোষণা করে সরকার। এ সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী, সৈকতের জোয়ার-ভাটার অঞ্চল থেকে ৩০০ মিটার পর্যন্ত যেকোনো স্থাপনা নির্মাণ ও উন্নয়ন নিষিদ্ধ। এর আগে গত বছরের ডিসেম্বর ও ২০২৩ সালেও একাধিকবার অভিযান চালিয়ে জেলা প্রশাসন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছিল।