সংবাদ সম্মেলনে এসপি
৬ বছরের শিশুকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করেন চাচি
মরদেহ ফেলে রাখা হয় সেপটিক ট্যাংকে
শরীয়তপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:১৬, ২ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ০২:৩৮, ২ অক্টোবর ২০২৫

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলায় পারিবারিক শত্রুতার জেরে ছয় বছরের শিশু তায়েবাকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার চাচি ও স্কুলশিক্ষিকা আয়শা খাতুনের বিরুদ্ধে। পরে সেপটিক ট্যাংকে ফেলে রাখেন মরদেহ।
বুধবার (১ অক্টোবর) বিকেলে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) নজরুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। পুলিশ এ ঘটনায় আয়শা খাতুনসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ জানায়, গত ২৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় খেলতে গিয়ে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় শিশু তায়েবা। দুই দিন পর ২৬ সেপ্টেম্বর উপজেলার ছৈয়ালকান্দি গ্রামে এক প্রতিবেশীর বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত তায়েবা স্থানীয় দারুন নাজাত মাদ্রাসার নার্সারি শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং টিটু সরদারের মেয়ে।
এ হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত আয়শা খাতুন (৪৭) সখিপুর সরকারবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এবং নিহত শিশুটির চাচি। তাকেসহ নাছিমা বেগম (৩৫), আসিফ ব্যাপারী (২০) ও শাহানাজ বেগমকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভ-সমাবেশ, মানববন্ধন ও থানা ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে।
পুলিশ সুপার জানান, ঘটনার পর নিহত শিশুর পিতা টিটু সরদার অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্তে সন্দেহভাজন হিসেবে মেয়েটির চাচি ও স্কুলশিক্ষক আয়শা খাতুন (৪৭), নাছিমা বেগম (৩৫) ও আসিফ ব্যাপারীকে (২০) আটক করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে নাছিমা বেগম হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেন এবং আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর আয়শা খাতুন ও আসিফ ব্যাপারীর তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দেলোয়ার মোল্লার মেয়ে শাহানাজ বেগমকেও (২৫) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শাহানাজের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বালার বাজারের একটি স্বর্ণের দোকান থেকে ভিকটিমের কানের দুল গলিত স্বর্ণপিণ্ড অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় স্বর্ণকার শিতল মাঝি ও রোজিনা বেগম আদালতে জবানবন্দি দিয়ে শাহানাজের সম্পৃক্ততার প্রমাণ দেন। তবে রিমান্ডে থাকা আয়শা খাতুন এখনো হত্যার দায় স্বীকার করেননি।
পুলিশ সুপার আরো জানান, “হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ অব্যাহত রয়েছে। নির্ধারিত সময়ে তদন্ত শেষে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. শরিফুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গোসাইরহাট সার্কেল) তানভীর হাসান ও সখিপুর থানার ওসি ওবায়দুল হক উপস্থিত ছিলেন।