কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গাপূজা
উখিয়া-টেকনাফ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯:৫৪, ১ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ০১:২৪, ২ অক্টোবর ২০২৫

কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং হিন্দু রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এবারও শারদীয় দুর্গাপূজা ধর্মীয় উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে। বাস্তুচ্যুত সনাতন ধর্মাবলম্বী রোহিঙ্গারা ২০১৮ সাল থেকে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসার পর ক্যাম্পেই দুর্গাপূজা উদযাপন করে আসছে।
চলতি বছরের দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে গত রবিবার ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে। কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১ ইস্টে অবস্থিত ‘শ্রী শ্রী শক্তি রাধাকৃষ্ণ মন্দির’-এ পূজার আয়োজন করা হয়। পাঁচ দিনব্যাপী এ পূজাকে ঘিরে ক্যাম্পের হিন্দু পরিবারগুলোতে আনন্দ-উৎসবের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের মিয়ানমারের সেনা অভিযানের সময় প্রায় ৮০টি সনাতন রোহিঙ্গা পরিবার বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। বর্তমানে কুতুপালং ক্যাম্পে এমন পরিবারের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৭টিতে, যেখানে প্রায় ৮০০ জন হিন্দু রোহিঙ্গা বসবাস করছে।
দুর্গাপূজা আয়োজক কমিটির সভাপতি মধুরম পাল বলেন, “নানা সংকটের মাঝেও প্রতিবছর আমরা দুর্গাপূজা উদযাপন করি। এই সময়টুকুই আমাদের জীবনে কিছুটা আনন্দ নিয়ে আসে।”
শরণার্থী দেবী বালা জানান, “আমাদের জীবন অনিশ্চয়তায় ঘেরা। তবে দুর্গাপূজার দিনগুলোতে আমরা কিছুটা আনন্দে কাটাই।”
পূজা নির্বিঘ্ন করতে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। ক্যাম্প ইনচার্জ মোহাম্মদ মুনিবুর রহমান বলেন, “বাস্তুচ্যুত সনাতন ধর্মাবলম্বীরা যাতে নির্বিঘ্নে পূজা পালন করতে পারেন, সে লক্ষ্যে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।” উখিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ জিয়াউল হকও নিরাপত্তা জোরদারের কথা জানান।
স্থানীয় পূজা উদযাপন কমিটিও সহায়তার হাত বাড়িয়েছে। কমিটির অর্থ সম্পাদক সজল আইছ জানান, “আমরা প্রতিবছর সীমিত সামর্থ্য নিয়েও তাদের পাশে দাঁড়াই। এ বছরও কিছু পূজা সামগ্রী ও নৈবেদ্য সরবরাহ করেছি।”
শুধু ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান নয়, দুর্গাপূজাকে ঘিরে ক্যাম্পের হিন্দু শিশু-কিশোরদের মাঝেও বাড়তি আনন্দ লক্ষ্য করা গেছে। প্রতিমা সাজসজ্জা, মণ্ডপ পরিষ্কার, ফুল তোলা—এসব কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়ে তারা খুঁজে পাচ্ছে উৎসবের ছোঁয়া।