টোকিও থেকে নিউ ইয়র্ক মাত্র ৬০ মিনিটে!
মহাকাশপথে বিপ্লব আনছে জাপান
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩:৪৫, ২৯ অক্টোবর ২০২৫
জাপান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক—এই বিশাল দূরত্ব পাড়ি দিতে আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিমানে বসে থাকতে হবে না। জাপানের একটি ভ্রমণ সংস্থা ঘোষণা দিয়েছে, তারা ২০৩০ সালের মধ্যে মহাকাশপথে মাত্র ৬০ মিনিটে টোকিও থেকে নিউ ইয়র্ক ভ্রমণের ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) জাপানের সংবাদমাধ্যম কিয়োডো নিউজ এজেন্সি ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড এ খবর নিশ্চিত করেছে।
এই যুগান্তকারী পরিবহন প্রকল্পটি একটি ‘পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট স্পেস ট্রান্সপোর্ট সার্ভিস’, যা মহাকাশের সীমান্ত ছুঁয়ে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে মানুষকে দ্রুত পৌঁছে দেবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, যানটি অফশোর বা সমুদ্রতীরবর্তী স্থান থেকে উড্ডয়ন করবে এবং মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে পৃথিবীর যেকোনো দুটি স্থানের সংযোগ স্থাপন করতে পারবে।
এই ভবিষ্যৎ ভ্রমণের জন্য যাত্রীদের গুনতে হবে বিশাল অঙ্কের টাকা। রাউন্ড-ট্রিপ টিকিটের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ১০০ মিলিয়ন ইয়েন, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৭ কোটি টাকারও বেশি।
পরিষেবাটির জন্য আবেদন শুরু হবে ২০২৬ অর্থবছরে, এবং ২০৪০-এর দশকে এটি পূর্ণাঙ্গভাবে কক্ষপথে অবস্থান নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই প্রকল্পে যুক্ত হয়েছে টোকিও-ভিত্তিক ‘ইনোভেটিভ স্পেস ক্যারিয়ার ইনকর্পোরেটেড’, যারা পুনর্ব্যবহারযোগ্য রকেট প্রযুক্তি তৈরি করছে। তাদের সভাপতি কোজিরো হাতাদা বলেন,“আমরা প্রতিটি ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়িয়ে খরচ কমানোর চেষ্টা করছি, যাতে ভবিষ্যতে সাধারণ মানুষও এই ভ্রমণে অংশ নিতে পারে।”
অন্যদিকে, নিপ্পন ট্র্যাভেল সংস্থার সভাপতি কেইগো ইয়োশিদা টোকিওতে সংবাদ সম্মেলনে বলেন,“এই প্রকল্প মহাকাশ ভ্রমণ ও পর্যটনের মধ্যে এক নতুন সেতুবন্ধন তৈরি করবে।”
নিপ্পন ট্র্যাভেল প্রকল্পের পণ্য ডিজাইন, বিপণন এবং যাত্রীসেবা ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে এটি হবে মানব ইতিহাসের দ্রুততম আন্তঃমহাদেশীয় ভ্রমণ প্রযুক্তি। আকাশপথের চেয়ে অনেক ওপরে মহাকাশসীমায় ছুটে চলবে এই যান, যা পৃথিবীর বাঁক অনুসরণ না করে সরলরেখায় এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পৌঁছে দেবে।
বিশ্বজুড়ে মহাকাশ পর্যটন এবং বাণিজ্যিক স্পেস ট্রান্সপোর্ট নিয়ে যে প্রতিযোগিতা চলছে, জাপানের এই উদ্যোগ তাতে এক নতুন মাত্রা যোগ করবে—টোকিও থেকে নিউ ইয়র্ক মাত্র এক ঘণ্টায়, যা এক সময় কল্পনা মনে হলেও এখন বাস্তবের পথে।
