জুলাই সনদ বাস্তবায়নে অনিশ্চয়তা হলে আরেকটি অভ্যুত্থান অনিবার্য হয়ে পড়বে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৭:৪৬, ৫ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১৭:৪৯, ৫ অক্টোবর ২০২৫

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু কঠোর সতর্কবার্তা উচ্চারণ করে বলেছেন— “সংবিধানের দোহাই দিয়ে যদি জুলাই সনদ বাস্তবায়নে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করা হয়, তবে আরেকটি অভ্যুত্থান অনিবার্য হয়ে পড়বে।”
রবিবার সকাল সাড়ে ১১টায় ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে অনুষ্ঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন। দীর্ঘ বিরতির পর পুনরায় শুরু হওয়া এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিশনের সহ-সভাপতি ড. আলী রীয়াজ, এবং সঞ্চালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সাংবাদিক মনির হায়দার।
এবি পার্টির পক্ষ থেকে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক।
বৈঠকের মধ্যাহ্ন বিরতিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, “সবাই যখন জুলাই সনদ বাস্তবায়নে একমত, তখন এর প্রক্রিয়া নিয়ে অযথা সাংবিধানিক বিতর্ক তুলে জটিলতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। শেখ হাসিনা সংবিধানের দোহাই দিয়েই সংবিধানকে ভূলুণ্ঠিত করে ফ্যাসিবাদী দূঃশাসন চালিয়েছিলেন। সেই প্রেক্ষিতেই জনগণকে বাধ্য হয়ে গণঅভ্যুত্থান করতে হয়েছিল।”
তিনি আরও বলেন, “গণঅভ্যুত্থান হলো জনগণের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষার চূড়ান্ত প্রকাশ। তাই সংবিধানের অজুহাতে আবার জনগণের আশা ব্যর্থ করা হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। তখন জটিলতা সৃষ্টিকারীদের গণরোষ থেকে পালাতে অনেকগুলো বড় হেলিকপ্টারও কম পড়ে যাবে।”
“জুলাই সনদ সংবিধান আদেশে জারি ও গণভোটের মাধ্যমে যাচাই করা হোক”
এবি পার্টি চেয়ারম্যানের প্রস্তাব অনুযায়ী, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় তিনটি ধাপ থাকা উচিত—
১.সংবিধান আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদ জারি করা,
২. সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদের আলোকে সুপ্রিম কোর্টের মতামত গ্রহণ,
৩. এবং সর্বোপরি জনগণের মতামত যাচাইয়ের জন্য গণভোটের আয়োজন।
ব্যারিস্টার সানী: “সংবিধান নয়, রাজনীতি বড় বাস্তবতা”
এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক বলেন, “জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার যুক্তি দিয়ে বিষয়টি পরবর্তী সংসদের ওপর ন্যস্ত করার প্রস্তাব অন্যায্য এবং জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনার পরিপন্থি।”
তিনি যুক্তি দিয়ে বলেন, “বিদ্যমান সংবিধানের কাঠামোর ভেতরে সরকার উৎখাতের ধারণা নেই। অথচ জুলাই অভ্যুত্থান কোনো সাংবিধানিক বিধান মেনে সংঘটিত হয়নি। ফলে ধারাবাহিকতার যুক্তি দুর্বল, অগ্রহণযোগ্য এবং রাষ্ট্রের কাঠামোগত পরিবর্তন বিলম্বিত করবে।”
তিনি বলেন, “জুলাই সনদের বাস্তবায়ন যতটা আইনি প্রশ্ন, তারচেয়ে বেশি রাজনৈতিক। রাষ্ট্রের পুনর্গঠনে রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের মধ্যে জাতীয় ঐকমত্য ছাড়া কোনো পথ নেই।”