গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষায় ঐক্যের ডাক এবি পাটি ও আপ বাংলাদেশের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪:৪৩, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

রাজনৈতিক দলগুলোর লক্ষ্য যেন কেবল ক্ষমতা দখল নয়, বরং জুলাই আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন হয়—এ আহ্বান জানিয়ে রাজধানীতে এক যৌথ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে ফারইস্ট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই সভার আয়োজন করে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) ও রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম ইউনাইটেড পিপলস (আপ বাংলাদেশ)। আলোচনায় অংশ নেয় রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনসহ একাধিক সংগঠন।
সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন এবি পার্টির সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু।
আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ুম, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস ফ্যাকাল্টির ডিন ড. ওয়ারেসুল করিম বুলবুল, আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলি আহসান জুনায়েদ, এবি পার্টির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার, সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, আপ বাংলাদেশের সদস্য সচিব আরেফিন হিজবুল্লাহ, প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, এবং ব্যারিস্টার নাসরিন সুলতানা মিলি প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান কেবল ক্ষমতা পরিবর্তনের লড়াই নয়—এটি ছিল জনগণের শাসন কাঠামো পুনর্গঠনের আহ্বান।
মাহমুদুর রহমান শহীদ কিশোর আনাসের চিঠি পাঠ করে শোনান এবং বলেন, “বড় দলগুলো নিজেদের স্বার্থে জুলাইকে বিপ্লব না বলে আন্দোলন বলে। অথচ শহীদদের আত্মত্যাগকে বৈধতার উৎস হিসেবে দেখা উচিৎ ছিল।” তিনি নির্বাচনের পর সব সমস্যার সমাধান হবে—এমন ধারণাকে ‘বোকামি’ বলে মন্তব্য করেন এবং বলেন, গণমাধ্যমকেও ভবিষ্যতে শাসকের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, “জুলাইয়ের শক্তিগুলোকে ভুল সংশোধন করে রাজপথে নামতে হবে। আবু সাঈদ যেই আদর্শের জন্য জীবন দিয়েছেন, সেটি থেকেই নতুন লড়াই শুরু করতে হবে।”
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নেতা হাসনাত কাইয়ুম বলেন, “জনগণের কাছেই ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে হবে। এবারের নির্বাচন ৪৬ বা ৭০ সালের মতো ঐতিহাসিক। বিপ্লব ও বিলাস একসঙ্গে চলে না—এবার জনগণকে দেশপ্রেমের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।”
ড. ওয়ারেসুল করিম বুলবুল বলেন, “জনতামুখী জোট গঠিত হলে এ আয়োজন রাজনৈতিক ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে থাকবে।”
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলি আহসান জুনায়েদ বলেন, “ক্ষমতা ভাগাভাগির প্রতিযোগিতা অভ্যুত্থানের চেতনা ধ্বংস করছে। জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া—এই ছিল জুলাই বিপ্লবের আসল লক্ষ্য।”
এবি পার্টির ডা. আব্দুল ওহাব মিনার বলেন, “অভ্যুত্থানপন্থী সব শক্তিকে একসাথে কাজ করতে হবে।”
আরেফিন হিজবুল্লাহ বলেন, “জুলাই বিপ্লবের মূল ছিল ফ্যাসিস্ট হাসিনার জিহবার বিরুদ্ধে জনতার প্রতিরোধ। জনগণের ক্ষমতায়নই ছিল তার লক্ষ্য।”
রাফে সালমান রিফাত বলেন, “রাতের আঁধারে নির্বাচনী আসন ভাগাভাগি গণঅভ্যুত্থানের চেতনা হতে পারে না।”
সভা শুরুর আগে স্বাগত বক্তব্যে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, “ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নতুন স্লোগান ‘ক্ষমতা না জনতা—জনতা জনতা’ রাজপথে জাগরণ এনেছিল।” তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ফ্যাসিবাদী শাসকরা প্রলোভন দেখিয়ে আন্দোলনের শক্তিকে বিভক্ত করার কৌশল নেয়। “কেউ কেউ সেই প্রলোভনে হেঁটেছেন, কিন্তু জনতার বজ্রকণ্ঠে তখনই উচ্চারিত হয়—ক্ষমতা নয়, জনতাই জয়ী হবে,” বলেন তিনি।