প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন মানবে না জনগণ: ইসিকে রাজনৈতিক নেতাদের বার্তা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৬:১০, ১৬ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১৭:১৫, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন (ইসি) কার্যালয়। ছবি: সংগৃহীত
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপে উঠে এসেছে কঠোর সতর্কবার্তা—অতীতের মতো প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন হলে জনগণ আর তা মেনে নেবে না। নির্বাচন পরিবেশ, আসনসীমা, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এবং রাজনীতিতে আস্থাহীনতার নানা ইস্যুতে ছয়টি দলের প্রতিনিধিরা সরাসরি কমিশনের কাছে স্পষ্ট বক্তব্য তুলে ধরেছেন।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের ইসি কার্যালয়ে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চলা প্রথম ধাপের বৈঠকে অংশ নেয়—গণফোরাম, গণফ্রন্ট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি এবং বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি।
সংশ্লিষ্টরা বলেন, আদালতের অযাচিত হস্তক্ষেপ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলতে পারে, তাই আসনসীমা বা নির্বাচনি প্রস্তুতিতে কমিশনকে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে।
গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী বলেন, “গণভোট যেন শেষ পর্যন্ত হাস্যকর ঘটনায় পরিণত না হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। বিগত সময়ে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে; এবার এমন হলে জাতি মেনে নেবে না।”
তিনি সব দলের জন্য সমান সুযোগ তৈরির দাবি জানান।
ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ: ১৫ বছর ভোট ছিল না, আস্থাহীনতা কাটেনি
চেয়ারম্যান সৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদীর অভিযোগ, “দীর্ঘ ১৫ বছর দেশে ভোট দেওয়ার পরিবেশ ছিল না। ফ্যাসিবাদী শক্তি একতরফা নির্বাচন করেছে। এখনো জনগণের মধ্যে আস্থাহীনতা রয়ে গেছে—এটি ইসি দূর করতে পারলেই সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ তৈরি হবে।”
মহাসচিব মুফতি সাখাওয়া হোসেন রাজি অভিযোগ করেন— “৫ আগস্টের আগে এক চক্র ফ্যাসিস্ট শক্তির সহায়তায় আমাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় দখল করে। নেতাদের জেলে পাঠানো হয়। অথচ তারা এখন এসে আমাদের আসন দখল করেছে। যারা তিনটি নির্বাচনেও জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছে, তারা কীভাবে ভোট চাইবে?”
ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ব্যারিস্টার আকমল হোসেন বলেন, “অতীতের তিনটি জাতীয় নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। এবার মানুষ উৎসবমুখর নির্বাচনের অপেক্ষায় রয়েছে। ইসিকেই পক্ষপাতহীন ভূমিকা নিশ্চিত করতে হবে।”
অতিরিক্ত মহাসচিব শাহ মোহাম্মদ আসলাম হোসাইন বলেন—“সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে জনগণ আবার হতাশ হবে। নির্বাচন বিতর্কিত করার যেকোনো চেষ্টা ইসিকেই প্রতিহত করতে হবে।”
সংলাপে বেশিরভাগ দলের প্রতিনিধিরাই জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের পরামর্শ দেন।
নির্বাচন কমিশনকে কঠোর, নিরপেক্ষ ও দৃঢ় অবস্থান নিতে হবে—লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত, সহিংসতা ও দখলদারি রাজনীতি প্রতিরোধ, সরকারি প্রশাসনের নিরপেক্ষতা বজায় রাখা ও আদালতের হস্তক্ষেপ রোধে নিজস্ব কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা।
সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন, নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
