কারও পক্ষে কাজ করব না: প্রতিশ্রুতি সিইসির
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৭:৩৯, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন / ফাইল ছবি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) দেশের কোনো দল বা ব্যক্তির পক্ষে কাজ করবে না। প্রচলিত আইন ও বিধি অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করাই ইসির একমাত্র নীতি।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের দ্বিতীয় দিনের সংলাপের সূচনা বক্তব্যে এই ঘোষণা দেন সিইসি। বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় সিইসি বলেন, “অনেকে মনে করেন, আমার পক্ষে কাজ করলে উনি নিরপেক্ষ; কিন্তু আমরা কারও পক্ষে কাজ করতে পারব না। আইন, বিধিবিধান ও বিবেক—এই পথেই হাঁটব, ইনশা আল্লাহ।”
এসময় সংলাপের বক্তব্য ভবনের বাইরে স্ক্রিনে সরাসরি প্রচার করা হয়। সংলাপে অংশ নেয় বাংলাদেশ জাসদ, বাংলাদেশ ন্যাপ, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সিইসি বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধি সুষ্ঠু নির্বাচনের মূল ভিত্তি। দলগুলো আচরণবিধি মানলে নির্বাচন কমিশনকে অতিরিক্ত কঠোর হতে হয় না।
তিনি বলেন, “আমরা শপথ নেওয়ার পর থেকেই জাতিকে একটি সুন্দর, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করে আসছি। রাজনৈতিক দলগুলো সহযোগিতা করলে আচরণবিধি স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিপালিত হয়।”
বিগত দশকের অভিজ্ঞতায় আচরণবিধি লঙ্ঘনের বহু ঘাটতি দেখা গেছে বলেও মন্তব্য করেন সিইসি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপতথ্য ছড়ানোকে আসন্ন নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেন এ এম এম নাসির উদ্দীন। তিনি বলেন, “ভুলতথ্য ছড়ানো এখন বড় মাথাব্যথার কারণ। এটা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হলেও জরুরি।”
আগামী নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের ওপর আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি দায়িত্ব পড়েছে—এ কথাও উল্লেখ করেন সিইসি। এর মধ্যে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের ভোটের ব্যবস্থা, দেশজুড়ে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তাদের ভোটের সুযোগ, জেলখানার কয়েদিদের ভোটের ব্যবস্থা- এসব কারণে প্রশাসনিক ও প্রযুক্তিগত চাপ বেড়েছে বলে জানান তিনি।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইসির সংলাপ দেরিতে শুরুর ব্যাখ্যা দিয়ে সিইসি বলেন, সংস্কার কমিশন রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আগেই ব্যাপক আলোচনা করেছে। এর ফলে ইসির কাজ কিছুটা সহজ হয়েছে। সবার কর্মব্যস্ততা ও অতিরিক্ত দায়িত্বের কারণে আলোচনা একটু পরে শুরু হয়েছে, তবে এতে কোনো সমস্যা হবে না।
সংলাপে হাস্যরসের মুহূর্ত
দুপুর সোয়া দুইটার দিকে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী সংলাপে যোগ দিলে সিইসি তাকে হেসে ধন্যবাদ জানান। এসময় তিনি বলেন, “বেটার লেট দ্যান নেভার।” উত্তরে কাদের সিদ্দিকীও হাসিমুখে আসন গ্রহণ করেন।
