৩৮ দেশে ভিসা ছাড়াই ভ্রমণের সুযোগ বাংলাদেশের নাগরিকদের
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮:১৫, ১৬ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১৮:১৭, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
ভিসা ছাড়াই ভ্রমণের সুযোগ বাংলাদেশের নাগরিকদের। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য বিশ্বের ৩৮টি দেশে ভিসা ছাড়াই ভ্রমণের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বহু দেশে ভিসা পাওয়ার জটিলতা আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেড়েছে। শিক্ষার্থী, পর্যটক ও কর্মরত নাগরিকরা এখন নিয়মিত ভিসা প্রত্যাখ্যানের মুখে পড়ছেন।
হাঙ্গেরি ও যুক্তরাষ্ট্রে স্কলারশিপ পাওয়া সত্ত্বেও ভিসা জটিলতায় বিদেশে যাওয়ার সুযোগ হারিয়েছেন তানজুমান আলম ঝুমা। তিনি জানান, “এক বছরের বেশি সময় অ্যাপ্লিকেশন, কাগজপত্র আর সাক্ষাৎকারে গেছে। কিন্তু ভিসা হাতে পাইনি।”
কোন কোন দেশ ভিসা দিচ্ছে না?
ট্যুর অপারেটরদের সংগঠন টোয়াবের সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান বলেন,“ইন্ডিয়া, ইউএই, কাতার, বাহরাইন, ওমান, উজবেকিস্তান, সৌদি আরব, ভিয়েতনাম—বেশ কিছু দেশ এখন ভিসা দিচ্ছে না বা দিচ্ছে খুব সীমিত পরিসরে।”
তার পাশাপাশি—থাইল্যান্ডের ভিসা প্রসেসিং সময় বেড়েছে,সিঙ্গাপুর-মালয়েশিয়ার ভিসা অনুমোদন কমে গেছে,ফিলিপাইনের ভিসা প্রসেস ধীরগতির,ইন্দোনেশিয়ার ভিসা ফি বেড়েছে,শ্রীলংকার ই-ভিসাও নিতে সময় লাগছে দুই–তিন দিন।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক অস্থিরতার পর ভারত প্রথমে পর্যটন ভিসা বন্ধ করে। এরপর ঘোষণা ছাড়াই বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশিদের ভিসা অনুমোদনে কড়াকড়ি আরোপ করছে।
পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানান—যুক্তরাষ্ট্র সাধারণত প্রতি বছর ৫–৬ লাখ ভিজিটর ভিসা (B1/B2) অনুমোদন করলেও ২০২৫ সালে সেই সংখ্যা নেমে এসেছে দুই লাখেরও নিচে।
অস্ট্রেলিয়া ও কানাডাও একইভাবে ভিসা অনুমোদন কমিয়েছে।
ভিসা জটিলতার মূল কারণগুলো—
অনিয়মিত পথে বিদেশ যাত্রার প্রবণতা বৃদ্ধি
সহজ ভিসা পাওয়া দেশকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করে অন্য দেশে প্রবেশ
ভ্রমণ ভিসায় শ্রমিক পাঠানো ও ভিসা অপব্যবহার
প্রবাসে রাজনৈতিক কোন্দল ও বিবাদে জড়ানো
আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের পাসপোর্টের দুর্বল অবস্থান
অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতায় বিদেশি কর্তৃপক্ষের সতর্কতা
হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের পাসপোর্ট সূচকে বাংলাদেশ বিশ্বের দুর্বলতম সপ্তম পাসপোর্ট, যা বিদেশি ভিসা মূল্যায়নে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন—অসৎ উপায়ে বিদেশে লোক পাঠানো চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন, দেশের ভেতরে আইনি প্রক্রিয়া দৃশ্যমান হলে আন্তর্জাতিক আস্থা বাড়বে।ভারত ছাড়া অন্যান্য দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনার সুযোগ এখনও খোলা।বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা বা ব্যবসায়িক ভিসার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সমন্বয় জোরদার করা প্রয়োজন।
