মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫

| ১৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

‘ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার বৈধতা দিয়েছে জামুকা’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯:১৬, ১১ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১৯:৫৪, ১১ অক্টোবর ২০২৫

‘ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার বৈধতা দিয়েছে জামুকা’

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীর বলেছেন, “ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা তৈরির মূল কারিগর হলো জামুকা (জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল)। জামুকা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই শুরু হয়েছে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানানোর সরকারি বৈধতা।”

শনিবার (১১ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা নৌকমান্ডো অ্যাসোসিয়েশনের’ ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

নঈম জাহাঙ্গীর বলেন, “অর্থের বিনিময়ে মুক্তিযোদ্ধা বানানো হয়েছে। আমাদের অনেককেই দালাল বানিয়ে তাদের মাধ্যমে টাকা আদায় করা হয়েছে। জামুকা না থাকলে এই অনৈতিক বাণিজ্য সম্ভব হতো না।”

২০০২ সালের ৩ জুন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় গঠিত হয় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)। এর লক্ষ্য ছিল মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবার ও যুদ্ধাহতদের কল্যাণ এবং তালিকা নিয়ন্ত্রণ। পরে ২০২২ সালে আওয়ামী লীগ সরকার আইনটি সংশোধন করে ‘পরিমার্জনপূর্বক যুগোপযোগী’ রূপ দেয়। তবে ২০২৫ সালের ৩ জুন অন্তর্বর্তী সরকার ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন’ আবার সংশোধন করে নতুন সংজ্ঞা যোগ করে—যেখানে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা সহযোগী—দুই আলাদা শ্রেণি করা হয়।

মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা নিয়ে নঈম জাহাঙ্গীর বলেন, “১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে সৈয়দ নজরুল ইসলাম ৮০ হাজার মুক্তিযোদ্ধার খরচের কথা লিখে পাঠিয়েছিলেন। অথচ এখন তালিকায় প্রায় আড়াই লাখ নাম! অর্থাৎ প্রতি তিনজনে দুজন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। আমরা ভুয়াদের রাজত্বে বাস করছি।”

তিনি অভিযোগ করেন, জামুকা সৃষ্টি হওয়ার পর থেকেই প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের মূল্যায়ন কমেছে এবং অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বার্থে মুক্তিযোদ্ধা তালিকা বিকৃত করা হয়েছে।

নঈম জাহাঙ্গীর আরও বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও বয়ান বিভ্রান্তিতে ভরা। যুদ্ধ ছিল জীবন-মৃত্যুর লড়াই, বক্তৃতার রাজনীতি নয়। কতজন শহীদ হয়েছেন, কত মা-বোন ইজ্জত হারিয়েছেন—এর কোনো নির্ভুল তথ্য আজও নেই। মিথ্যা তথ্যের ওপর কোনো জাতি টিকে থাকতে পারে না।”

তিনি আহ্বান জানান, “আমাদের মুক্তিযোদ্ধারাই প্রকৃত যোদ্ধাদের তালিকা তৈরি করবেন, মন্ত্রণালয় বা জামুকা নয়। যারা রণাঙ্গনে লড়েছেন, তাদের নামই তালিকায় থাকা উচিত।”

২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে সারা দেশে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ৫৪টি অফিস পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাকে স্মরণ করে নঈম জাহাঙ্গীর বলেন, “আমাদেরই সন্তানরা আবার সংগ্রামে নেমেছে। অথচ আমরা তাদের পাশে দাঁড়াইনি।”

তিনি আরও বলেন, “স্বাধীনতার পর থেকে কত অর্থ লুট হয়েছে, কত মিথ্যা ইতিহাস তৈরি হয়েছে—তার তদন্তে একটি কমিশন গঠন করা জরুরি।”

নঈম জাহাঙ্গীর বলেন, “মুক্তিযোদ্ধা সংসদ অবশ্যই প্রকৃত যোদ্ধাদের হাতে থাকতে হবে। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের জায়গা যেন আর না থাকে। এ লজ্জা থেকে মুক্তি চাই আমরা—প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা।”

সম্পর্কিত বিষয়:

আরও পড়ুন

শীর্ষ সংবাদ:

সাতপাকে বাঁধা পড়লেন সামান্থা-রাজ নিদিমরু
মেয়ে সন্তানের বাবা হলেন সংগীতশিল্পী ইমরান
১ ডিসেম্বর ১৯৭১: কালীগঞ্জ গণহত্যায় শহীদ হন ১৩৬ নিরীহ মানুষ
‘দেশ স্বাধীন করলেও চৌকিদারের কাছেও দাম পাই না’
বিকেএসপির প্রথম থিম সং, ‘এসো স্বদেশের পতাকা উড়াই’
স্বর্ণের দাম আরও বাড়ল, ভরি কত
বাউলশিল্পী আবুল সরকারের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা
ইসি চাইলে ভোটার হতে পারবেন তারেক রহমান
জোটে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্ট
অধ্যাদেশ জারির একদিনের মধ্যে সচিব পেল সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়
আগামীকাল এলপি গ্যাসের নতুন দাম ঘোষণা
এখনকার সংস্কার নির্বাচিত সরকারের হজম করা কঠিন: ওয়াহিদউদ্দিন
‘মেড ইন বাংলাদেশ’ এখন মর্যাদার প্রতীক: পরিবেশ উপদেষ্টা
চকবাজার ও মোহাম্মদপুরের ভবনে আগুন, দেড় ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে
নির্বাচন পেছাতে দেওয়া হবে না: পীর সাহেব চরমোনাই
একটি দল প্রশাসনিক ক্যু করার চেষ্টা করছে: জামায়াত আমির
লিবিয়ায় বন্দী ১৭৩ বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনলো সরকার
মোহাম্মদপুরে ৬ তলা ভবনে আগুন
ডেঙ্গুতে নভেম্বরে বছরের সর্বোচ্চ মৃত্যু ১০৪
চকবাজারের আবাসিক ভবনে আগুন