চোখের নিচে কালি
লুকিয়ে থাকতে পারে শারীরিক অসুখ!
স্বাস্থ্য ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯:৪৩, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আজকাল অনেকেই চোখের নিচে কালচে দাগ বা ডার্ক সার্কলকে শুধুমাত্র রূপচর্চার সমস্যা বলে মনে করেন। কিন্তু চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে, এটি শরীরের ভেতরের নানা অসুস্থতার নীরব ইঙ্গিতও হতে পারে। শরীর যখন সঠিকভাবে কাজ করে না, তখন তা নানা সংকেত পাঠায়—ডার্ক সার্কল তারই একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ।
ডিহাইড্রেশনের প্রভাব
চোখের নিচে কালি পড়ার অন্যতম প্রধান কারণ হলো শরীরে পানিশূন্যতা।
ত্বক পাতলা হয়ে যাওয়া
পানি কম থাকলে ত্বক শুষ্ক ও দুর্বল হয়। চোখের তলার পাতলা চামড়া আরও ভঙ্গুর হয়ে ভেতরের রক্তনালী দৃশ্যমান হয়, যা বাইরে থেকে কালো দাগের মতো দেখা দেয়।
রক্তনালীতে চাপ ও জমাট বাঁধা
ডিহাইড্রেশনে রক্ত সঞ্চালন বিঘ্নিত হয়। এতে চোখের নিচের ছোট রক্তনালীগুলোতে জমাট বাঁধা শুরু হয়, যা কালচে আভা তৈরি করে।
শারীরিক ক্লান্তি ও দুর্বলতা
পর্যাপ্ত জল না পেলে শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ ব্যাহত হয়। ফলে ক্লান্তি, ঘুমের মান খারাপ হওয়া এবং শেষ পর্যন্ত চোখের নিচে দাগ পড়ে।
অন্য কারণগুলোও সমান গুরুত্বপূর্ণ
ডিহাইড্রেশন ছাড়াও ডার্ক সার্কল হতে পারে নানা কারণে—
বংশগত প্রভাব: পরিবারের কারও এই প্রবণতা থাকলে তা পরবর্তী প্রজন্মেও দেখা যায়।
অ্যালার্জি: নাক বন্ধ ও অ্যালার্জির ফলে চোখের চারপাশে ফোলা ও দাগ পড়তে পারে।
আয়রনের অভাব: রক্তে অক্সিজেন পরিবহন কমে গেলে ত্বকে কালচে ছাপ দেখা দেয়।
অতিরিক্ত সূর্যালোক: মেলানিন উৎপাদন বেড়ে চোখের চারপাশে দাগ গাঢ় হয়।
হরমোনজনিত সমস্যা: যেমন থাইরয়েডের অসুখও ডার্ক সার্কলের সঙ্গে জড়িত।
প্রতিরোধ ও সমাধান
প্রতিদিন অন্তত ৮–১০ গ্লাস পানিপান করা।
পর্যাপ্ত ঘুম ও সুষম খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা।
পালং শাক, ডিম, ডাল, মাংসের মতো আয়রনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া।
স্ক্রিন টাইম কমানো, চোখ পরিষ্কার রাখা ও সানগ্লাস ব্যবহার করা।
নিয়মিত ব্যায়াম ও বিশ্রামের মাধ্যমে শরীর সক্রিয় রাখা।
সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে বা অন্য উপসর্গ দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
চোখের নিচে কালি শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্য নষ্ট করে না, বরং শরীরের অভ্যন্তরীণ গোলমালেরও সতর্ক সংকেত দেয়। তাই একে অবহেলা না করে জীবনযাত্রায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনুন। সময় মতো ব্যবস্থা নিলে সহজেই এই সমস্যার প্রভাব কমানো সম্ভব।