“প্রায়ই পায়ের তলায় জ্বালা করছে
অবহেলা নয়, কোন মারাত্মক রোগের ইঙ্গিত হতে পারে”
স্বাস্থ্য ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫:৩৭, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আমরা অনেক সময় পায়ের তলায় হালকা জ্বালা বা ঝাঁঝালো অনুভূতিকে গুরুত্ব দিই না। ধরে নিই ক্লান্তি, বেশি হাঁটাহাঁটি বা দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার কারণে এমন হচ্ছে। কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন, যদি এই সমস্যা বারবার ঘটে বা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে এটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার প্রাথমিক সংকেত হতে পারে। বিশেষ করে যখন জ্বালার সঙ্গে অসাড়তা, ঝিমঝিম ভাব, ব্যথা বা হাঁটাচলায় সমস্যা দেখা দেয়, তখন একে অবহেলা করা বিপজ্জনক।
সম্ভাব্য কারণগুলো
১. ভিটামিনের ঘাটতি
শরীরে ভিটামিন বি-১২-এর অভাব স্নায়ুর ক্ষতি ঘটায়। এর ফলে পায়ের তলায় জ্বালা, অসাড়তা, ঝিমঝিমভাব হয়। শুধু বি-১২ নয়, ভিটামিন বি-৫, ডি ও ই-এর অভাবও স্নায়ু ও পেশির সমস্যার কারণ হতে পারে। নিয়মিত ডিম, দুধ, মাছ, শাকপাতা, বাদাম খাওয়া ও প্রয়োজনে সাপ্লিমেন্ট গ্রহণে উপকার পাওয়া যায়।
২. স্নায়ুর ক্ষতি (ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি)
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে পায়ের তলায় জ্বালা, সুই ফোটানোর মতো ব্যথা, অসাড়তা, ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। অবহেলা করলে হাঁটাচলাই কঠিন হয়ে উঠতে পারে।
৩. ফাঙ্গাল সংক্রমণ (অ্যাথলিটস ফুট)
অতিরিক্ত ঘাম ও ভেজা পরিবেশে ফাঙ্গাস জন্মায়। এতে পায়ে চুলকানি, জ্বালাপোড়া, ফাটা, ত্বক খসখসে হয়ে যাওয়া দেখা দেয়। নিয়মিত পা শুকনো রাখা, পরিষ্কার মোজা ব্যবহার এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল ক্রিম বা পাউডার ব্যবহার করে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
৪. রক্ত সঞ্চালনের সমস্যা
দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করা বা অস্বস্তিকর জুতো ব্যবহার রক্তসঞ্চালন ব্যাহত করে। ফলে অক্সিজেন কম পৌঁছায়, আর তখন জ্বালা, ব্যথা ও ক্লান্তি বাড়ে। ভেন্টিলেটেড জুতো ব্যবহার ও মাঝে মাঝে পা উঁচু করে রাখলে আরাম মেলে।
৫. থাইরয়েড ও কিডনি সমস্যা
থাইরয়েড হরমোনের সমস্যা বা কিডনি সঠিকভাবে কাজ না করলে শরীরে টক্সিন জমে স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর ফলে পায়ে জ্বালা ও অসাড়তা দেখা দেয়, যা দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন।
ঘরোয়া প্রতিকার
ঠান্ডা পানিতে পা ভিজিয়ে রাখা সাময়িক স্বস্তি দেয়
অ্যালোভেরা জেল প্রদাহ ও জ্বালা কমায়
নরম ও আরামদায়ক জুতো ব্যবহার করুন
নিয়মিত পা পরিষ্কার ও শুকনো রাখুন
হালকা ম্যাসাজ বা ব্যায়ামে রক্তসঞ্চালন বাড়ে
কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন
জ্বালার সঙ্গে অসাড়তা বা ঝিমঝিম ভাব থাকলে
হাঁটতে অসুবিধা হলে
পায়ে ক্ষত বা ফাটল তৈরি হয়ে ভাল না হলে
জ্বর, ফোলা বা ত্বকের রং পরিবর্তন হলে