শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

| ১ কার্তিক ১৪৩২

অতীশ দীপঙ্করের নামে আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা সময়ের দাবি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আশুলিয়া (ঢাকা) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২১:১০, ১০ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ২২:৩৭, ১০ অক্টোবর ২০২৫

অতীশ দীপঙ্করের নামে আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা সময়ের দাবি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

বৌদ্ধ ধর্ম ও দর্শনের বিশিষ্ট মনীষী অতীশ দীপঙ্করের নামে একটি আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

তিনি বলেন, “বৌদ্ধ ধর্ম ও দর্শন চর্চা এবং প্রচার-প্রসারে পূর্ব এশিয়া তথা বিশ্বজুড়ে অতীশ দীপঙ্কর এক স্মরণীয় নাম। তিব্বতীরা তাকে ‘অতীশ’ উপাধিতে ভূষিত করেছেন, যার অর্থ ‘শান্তি’। তিনি ছিলেন ধর্মগুরু, শিক্ষক, পণ্ডিত, দার্শনিক, বিতার্কিক ও বাগ্মী—বাংলাদেশের সন্তান হিসেবে তাঁর কীর্তি আমাদের জন্য গৌরবের।”

শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ঢাকার আশুলিয়ায় বোধিজ্ঞান কেন্দ্র (বৌদ্ধ বিহার) আয়োজিত কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘অতীশ দীপঙ্করের জ্ঞান, দর্শন, ধর্মচর্চা ও মানবতাবাদী শিক্ষা আমাদের জাতীয়ভাবে লালন করা উচিত। তার নামে একটি আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা সময়ের দাবি।’

তিনি আরও বলেন, বৌদ্ধ ধর্মের মূল শিক্ষা অহিংসা, সাম্য, মৈত্রী ও প্রীতি—যা সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অপরিহার্য। বুদ্ধের উপদেশ অনুযায়ী মানুষকে হতে হবে মৈত্রীপরায়ণ, ক্ষমাশীল ও লোভমোহহীন। সমাজে শ্রদ্ধা, সম্মান ও মানবিকতা প্রতিষ্ঠিত হলেই শান্তি আসবে।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘বৌদ্ধ ধর্মের পঞ্চশীল মানবতাবাদী ও সার্বজনীন অধিকারমূলক পাঁচটি মৌলিক নীতি, যা মানুষকে সুনীতিপরায়ণ জীবনযাপনের শিক্ষা দেয়। এসব চর্চা সমাজ থেকে অন্যায়, অবিচার, অনাচার, অপরাধ ও দুর্নীতি দূর করতে সহায়ক হবে।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

তিনি জানান, আশ্বিনী পূর্ণিমা থেকে কার্তিকী পূর্ণিমা পর্যন্ত মাসব্যাপী কঠিন চীবর দান উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সবধরনের নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

পরে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশে সব ধর্মই শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা প্রচার করে আসছে। আমাদের দেশে ধর্মীয় বিভেদ নেই—সবাই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে নিজ নিজ ধর্ম পালন করছে। কিন্তু এক শ্রেণির ফ্যাসিস্ট বুদ্ধিজীবী মাঝে মাঝে বিষয়টিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা চালায়।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনার ধর্মপাল বীরাক্কোদি, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী দয়াল কুমার বড়ুয়া, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শুভাশীষ চাকমা এবং কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম প্রমুখ।

সম্পর্কিত বিষয়:

আরও পড়ুন