অক্টোবরের ১৫ দিনেই দেশে রেমিট্যান্স সাড়ে ১৭ হাজার কোটি টাকা

চলতি অক্টোবর মাসের প্রথম ১৫ দিনেই প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সে নতুন গতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ সময়ের মধ্যে দেশে এসেছে ১৪৩ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, যা টাকায় প্রায় ১৭ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ৯ কোটি ৫৬ লাখ ডলার বা ১ হাজার ১৬৭ কোটি টাকার বেশি প্রবাসী আয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছর রেমিট্যান্স বেড়েছে প্রায় ১২ কোটি ৫০ লাখ ডলার। ২০২৪ সালের অক্টোবরের প্রথমার্ধে প্রবাসী আয় ছিল ১৩১ কোটি ডলার, যা থেকে এবার প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৯.৫ শতাংশ।

চলতি ২০২৫–২৬ অর্থবছরের শুরু থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত দেশে এসেছে ৯০২ কোটি ১০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এ আয় ছিল ৭৮৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার। ফলে অর্থবছর অনুযায়ী রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৮ শতাংশে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মাসভিত্তিক পরিসংখ্যান বলছে—
জুলাই: ২৪৭ কোটি ৭৮ লাখ ডলার
আগস্ট: ২৪২ কোটি ১৯ লাখ ডলার
সেপ্টেম্বর: ২৬৮ কোটি ৫৮ লাখ ডলার

এ ধারাবাহিক বৃদ্ধিই অক্টোবরের প্রথমার্ধে আশাব্যঞ্জক প্রবাহের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

২০২৪–২৫ অর্থবছরের মার্চ মাসে রেমিট্যান্স পৌঁছেছিল ৩২৯ কোটি ডলারে, যা ছিল ওই অর্থবছরের সর্বোচ্চ মাসিক রেকর্ড। পুরো অর্থবছরে রেমিট্যান্সের মোট পরিমাণ দাঁড়ায় ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার, আগের বছরের তুলনায় প্রায় ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি।

অন্যদিকে, ২০২৩–২৪ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার। ওই সময় মাসভিত্তিক আয় ছিল— জুলাই ১৯১.৩৭ কোটি, আগস্ট ২২২.১৩ কোটি, সেপ্টেম্বর ২৪০.৪১ কোটি, অক্টোবর ২৩৯.৫০ কোটি, নভেম্বর ২২০ কোটি, ডিসেম্বর ২৬৪ কোটি, জানুয়ারি ২১৯ কোটি, ফেব্রুয়ারি ২৫৩ কোটি, মার্চ ৩২৯ কোটি, এপ্রিল ২৭৫ কোটি, মে ২৯৭ কোটি এবং জুনে ২৮২ কোটি ডলার।

অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, বৈধ ব্যাংক চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে প্রণোদনা অব্যাহত রাখা এবং হুন্ডি কার্যক্রমে কঠোর নজরদারির ফলেই প্রবাসী আয়ে ধারাবাহিক বৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে। একই সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে বাংলাদেশি শ্রমিকের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এ প্রবৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।