বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার
“মহিষ দেশের সম্পদ, অবহেলা আর নয়”
সাভার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭:০০, ৮ অক্টোবর ২০২৫

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, মহিষ বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ, যা দীর্ঘদিন অবহেলিত থেকেছে। তিনি বলেন, “মহিষের দই এখন বাংলাদেশের জিআই পণ্য হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এ সম্পদকে অবহেলা নয়, বরং রক্ষা ও বিকাশে সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাবে।”
আজ সকালে সাভারের মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারে আয়োজিত “বৈজ্ঞানিক সম্মেলন–২০২৫”-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে বাংলাদেশ বাফেলো অ্যাসোসিয়েশন।
উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, “মহিষের দুধ থেকে শুধু দই নয়, চিজ ও অন্যান্য পণ্য উৎপাদনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হলে খামারিরা নতুন আয়ের সুযোগ পাবেন। এসব পণ্য রপ্তানিযোগ্য হয়ে অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, কৃষি ও প্রাণিসম্পদ একসঙ্গে মিলেই খাদ্য উৎপাদনের ভিত্তি গড়ে তোলে। কিন্তু অনেকেই খাদ্য উৎপাদন বলতে কেবল কৃষিকেই বোঝেন। কৃষিক্ষেতে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারে চারণভূমি হ্রাস পাচ্ছে—যা মহিষ পালনে বড় প্রতিবন্ধক। এ বিষয়ে তিনি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ও সমন্বিত খাদ্য উৎপাদন পরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানান।
উপদেষ্টা বলেন, “গবাদিপশুর তালিকায় মহিষের যথাযথ স্থান দেওয়া হয়নি। প্রাণিসম্পদ খাতে এর গুরুত্ব এখনো অবমূল্যায়িত।”
দেশে মহিষের সংখ্যা কমে যাওয়া এবং চারণভূমির অভাবকে তিনি ‘উদ্বেগজনক পরিস্থিতি’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ বাফেলো অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রফেসর ড. মো. ওমর ফারুক।গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. রুহুল আমিন।বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নীলুফা আখতার, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান, এবং বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুক।
ভারতের ড. প্রীতিশ হরিয়ানায় মুরাহ মহিষ ব্যবস্থাপনার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন, আর ড. হিরন্ময় বিশ্বাস ইটালির দুধ উৎপাদন ব্যবস্থার সঙ্গে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে টেকসই দুধ উৎপাদনের সম্ভাবনা আলোচনা করেন।স্বাগত বক্তৃতা দেন ড. গৌতম কুমার দেব।
দুপুরে উপদেষ্টা ফরিদা আখতার সাভারের কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামার চত্বরে নবনির্মিত কেন্দ্রীয় কৃত্রিম প্রজনন ল্যাবরেটরি উদ্বোধন করেন।
এ সময় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান, কেন্দ্রীয় কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের পরিচালক মো. শাহজামান খান, এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।উপদেষ্টা ল্যাব পরিদর্শন করে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর কার্যক্রমের প্রশংসা করেন।