ট্রাম্পের নতুন বাণিজ্য নির্দেশ
গাড়ির যন্ত্রাংশে শুল্ক ছাড় বাড়ল
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩:০৪, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার এক নির্বাহী আদেশে গাড়ি শিল্পে শুল্ক কাঠামোতে বড় পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি আমদানিকৃত গাড়ির যন্ত্রাংশে ৩.৭৫ শতাংশ কর-ছাড়ের সুবিধা ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছেন—যা আগে ধাপে ধাপে কমিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল।
একই সঙ্গে তিনি আমদানিকৃত মাঝারি ও ভারী ট্রাক এবং এগুলোর যন্ত্রাংশে ২৫ শতাংশ নতুন শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তও আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর করেছেন। এই শুল্ক আগামী ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হবে।
এই পদক্ষেপের পেছনে যুক্তি হিসেবে ট্রাম্প প্রশাসন আবারও তুলে ধরেছে “জাতীয় নিরাপত্তা” বিষয়টি। ১৯৬২ সালের ট্রেড এক্সপানসন অ্যাক্ট এর ২৩২ ধারা অনুযায়ী পরিচালিত তদন্তে বলা হয়, আমদানি নির্ভরতা যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত শিল্পগুলোকে দুর্বল করে তুলছে।
ট্রাম্প এই ধারার আওতায় পূর্বে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে শুল্ক আরোপ করেছিলেন, এবার সেটির পরিধি বাড়িয়ে ট্রাক শিল্পেও প্রয়োগ করা হলো। বিশ্লেষকদের মতে, এটি ট্রাম্পের “আমেরিকা ফার্স্ট ম্যানুফ্যাকচারিং” নীতিরই ধারাবাহিকতা।
শুক্রবারের ঘোষণায় আমেরিকায় অ্যাসেম্বেলড (সংযোজিত) গাড়ির যন্ত্রাংশ আমদানিকারক কোম্পানিগুলোকে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।আগে এই কর-ছাড়ের হার প্রতি বছর কমানোর কথা থাকলেও এখন ২০৩০ সাল পর্যন্ত অপরিবর্তিতভাবে ৩.৭৫ শতাংশ ছাড় বহাল থাকবে।
একই রকম সুবিধা মাঝারি ও ভারী ট্রাক শিল্পের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে—শর্ত হলো, গাড়ি বা ট্রাকটি যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি করতে হবে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই ব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক উৎপাদনকেই উৎসাহিত করবে।
যদিও ২৫ শতাংশ নতুন শুল্ক যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা ট্রাকের জন্য বড় ধাক্কা, তবু যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো-কানাডা) বাণিজ্যচুক্তির আওতায় থাকা দেশগুলোর জন্য কিছু বিশেষ সুবিধা থাকবে।
যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে ভারী ট্রাক আমদানির ৭৮ শতাংশ আসে মেক্সিকো থেকে, আর ১৫ শতাংশ কানাডা থেকে। এই দুই দেশ থেকে আসা ট্রাকগুলোর নন আমেরিকান কনটেন্ট বা বাইরের অংশেই শুধু ২৫ শতাংশ শুল্ক পড়বে।
তবে বাস আমদানিতে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ হবে এবং তা কোনো ছাড়ের আওতায় পড়বে না।
মেক্সিকোর গাড়ি রপ্তানি ইতিমধ্যে চাপে পড়েছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি-আগস্ট সময়ের মধ্যে দেশটির যুক্তরাষ্ট্রে ভারী যান রপ্তানি আগের বছরের তুলনায় প্রায় ২৬ শতাংশ কমেছে। নতুন শুল্ক আরোপে এই প্রবণতা আরও তীব্র হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বাণিজ্য বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত দেশীয় শিল্প রক্ষার কৌশলগত প্রচেষ্টা হলেও, এটি উত্তর আমেরিকার সরবরাহ-শৃঙ্খলে নতুন ভারসাম্যহীনতা তৈরি করতে পারে।