কর্মক্ষেত্রে ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপনে তারেক রহমানের মহাপরিকল্পনা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩:১১, ৩০ অক্টোবর ২০২৫
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশের নারী কর্মজীবীদের জন্য এক যুগান্তকারী পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশের প্রতিটি কর্মক্ষেত্রে শিশুদের জন্য ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন করা হবে, যাতে কোনো নারীকে নিজের পরিবার ও পেশাগত ভবিষ্যতের মধ্যে বেছে নিতে না হয়।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে প্রকাশিত এক পোস্টে তিনি এই পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
তিনি লিখেছেন, “যখন কোনো তরুণী মা পর্যাপ্ত শিশু পরিচর্যার সুযোগ না পেয়ে চাকরি ছাড়েন, অথবা কোনো ছাত্রী পড়াশোনা বন্ধ করে দেন, তখন বাংলাদেশ হারায় সম্ভাবনা, উৎপাদনশীলতা এবং অগ্রগতি।”
নারীর ক্ষমতায়নে পাঁচদফা পরিকল্পনা
তারেক রহমান জানান, বিএনপি এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চায়, যেখানে নারী কর্মজীবীরা শিশু পরিচর্যার সুবিধা পাবে। এজন্য তার পরিকল্পনায় রয়েছে পাঁচটি বড় উদ্যোগ—
১.. সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন।
২. সরকারি অফিসগুলোতে ধাপে ধাপে ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপনের জাতীয় পরিকল্পনা গ্রহণ।
৩.বড় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও কারখানায় বাধ্যতামূলক ডে-কেয়ার ব্যবস্থা।
৪.যেসব নিয়োগকর্তা শিশু পরিচর্যার ব্যবস্থা রাখবে, তাদের কর সুবিধা ও সিএসআর ক্রেডিট প্রদান।
৫.নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মান অনুযায়ী কেয়ারগিভারদের প্রশিক্ষণ ও সার্টিফিকেশন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে থাকা তারেক রহমান বলেন, এই উদ্যোগ শুধুমাত্র নারী কল্যাণ নয়, বরং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কৌশলের অংশ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০২৪ সালের শ্রমশক্তি জরিপ উদ্ধৃত করে তিনি উল্লেখ করেন, “পুরুষদের তুলনায় নারীদের শ্রমবাজারে অংশগ্রহণ এখনো অনেক কম — পুরুষের ৮০ শতাংশের বিপরীতে নারীদের অংশগ্রহণ মাত্র ৪৩ শতাংশ। অর্থাৎ, দেশের অর্ধেকেরও বেশি মেধা এখনো ব্যবহারহীন।”
তিনি দাবি করেন, “এই সংস্কার নারীর কর্মসংস্থান বাড়াতে, পারিবারিক আয় বৃদ্ধি করতে এবং জাতীয় জিডিপিতে ১ শতাংশ পর্যন্ত যোগ করতে সক্ষম।”
তারেক রহমান বলেন, “শিশু পরিচর্যা কোনো দয়া-দাক্ষিণ্য নয়, এটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবকাঠামোর একটি অপরিহার্য অংশ। সড়ক যেমন বাজারকে সংযুক্ত করে, তেমনি ডে-কেয়ার সেন্টার নারীদের কর্মজীবনে সাফল্যের সঙ্গে সংযুক্ত করে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) ও আইএলও-এর গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব প্রতিষ্ঠানে ডে-কেয়ার সুবিধা আছে, সেখানে কর্মী ধরে রাখার হার বেশি, অনুপস্থিতি কম এবং প্রতিষ্ঠানগুলো এক বছরের মধ্যেই ব্যয় উঠিয়ে আনতে পারে।”
২০৩৪ সালের লক্ষ্য: অন্তর্ভুক্তিমূলক ট্রিলিয়ন-ডলার অর্থনীতি বিএনপি নেতার দৃষ্টিতে, “আমাদের লক্ষ্য ২০৩৪ সালের মধ্যে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ট্রিলিয়ন-ডলারের অর্থনীতি গড়ে তোলা, যেখানে প্রতিটি নাগরিক—বিশেষ করে নারী—গর্বের সঙ্গে দেশের প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখবে।”
তিনি আহ্বান জানান, “আসুন, আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়ি যেখানে প্রতিটি কর্মজীবী মা ও ছাত্রী নিজের সাফল্যের স্বাধীনতা পান; যেখানে সমাজের যত্ন ও সহযোগিতাকে অগ্রগতির ভিত্তি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।”
