বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫

| ৫ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা কি ফিরছে?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩:০৮, ২০ নভেম্বর ২০২৫

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা কি ফিরছে?

হাইকোর্ট। ফাইল ছবি

দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের রায় আজ বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর)। অর্থাৎ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাসংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল ও এসংক্রান্ত আবেদনের ওপর চুড়ান্ত রায় দেবেন সর্বোচ্চ আদালত। 

এই রায়ে জানা যাবে, ১৪ বছর আগে বাতিল ঘোষণা করা নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা আদৌ ফিরছে কি না, ফিরলেও কী আঙ্গিকে ফিরবে ও কবে থেকে ফিরবে।

গত ১১ নভেম্বর শুনানি শেষে আজ ২০ নভেম্বর রায় ঘোষণার জন্য রেখেছিলেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ। সে অনুযায়ী রায় ঘোষণার জন্য আপিল বিভাগের আজকের কার্যতালিকায় ১ ও ২ নম্বর ক্রমিকে রাখা হয়েছে দুটি আপিল ও আবেদন।

রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল  মো. আসাদুজ্জামানসহ সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের প্রত্যাশা, চতুর্দশ সংসদ নির্বাচন থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার সম্ভাব্য কার্যকারিতা রেখে আপিল মঞ্জুর করে রায় দেবেন সর্বোচ্চ আদালত। সে রকম রায় হলে এর পরের, অর্থাৎ চতুর্দশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে কার্যকর হবে এই সরকারব্যবস্থা। 

এর আগে গত ১১ নভেম্বর নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের শুনানি শেষ হয়। এ বিষয়ে ২০ নভেম্বর রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য করা হয়। 

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেন। টানা ১০ দিন শুনানি শেষে দেশের সর্ব্বোচ আদালত ঐতিহাসিক এ মামলার রায়ের দিন ঠিক করেন। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের অন্য ৬ সদস্য হলেন— বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি মো. রেজাউল হক, বিচারপতি এস এম ইমদাদুল হক, বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি ফারাহ মাহবুব।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া, বিএনপির পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহামদ শিশির মনির। ইন্টারভেনর হিসেবে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিকী, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, অ্যাডভোকেট মহসীন রশিদ, ব্যারিস্টার শাহরিয়ার কবির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক।

গত ২, ৪, ৫, ৬, ১১ নভেম্বর ও ২৯, ২৮, ২৩, ২২ অক্টোবর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের টানা শুনানি হয়।

এর আগে ২১ অক্টোবর নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের শুনানি শুরু হয়।

গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়।

এরপর ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আপিল করেন।

যেভাবে বৈধ হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা

সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগ এ রিট খারিজ করেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করা হয়।

পরে বাতিল হলো যেভাবে

এই সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম সলিমউল্লাহসহ অন্যরা ১৯৯৮ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট রায় দেন।

এ রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালে আপিল করে রিট আবেদনকারীপক্ষ। এই আপিল মঞ্জুর করে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।

ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ–সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়। 

ফের আলোচনায় জুলাই আন্দোলনের পর

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি। অন্য চারজন হলেন- তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান।

আপিল বিভাগের ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ১৬ অক্টোবর একটি আবেদন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

এছাড়া রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছরের ২৩ অক্টোবর আরেকটি আবেদন করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।

পরে নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছর একটি আবেদন করেন।

সম্পর্কিত বিষয়:

আরও পড়ুন

শীর্ষ সংবাদ:

লালদিয়া ও পানগাঁওয়ে বিনিয়োগকারীরা পাবেন ১০ বছর করমুক্ত সুবিধা
নারী–শিশু সুরক্ষায় সরাসরি মাঠে কাজ করতে চান মহিলা ও শিশু উপদেষ্টা
এনসিপির মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের সময় শেষ হচ্ছে বৃহস্পতিবার
৩০ নভেম্বর থেকে ৭ বিভাগে ৮ দলের সমাবেশ
বিএনপির প্রার্থী বদলের দাবীতে আখাউড়ায় কাফনের কাপড় পড়ে মশাল মিছিল
শততম টেস্টে মুশফিককে পন্টিং–করুনারত্নের অভিনন্দন
বার্সেলোনার প্রেসিডেন্ট হলে প্রথম মেসিকে ফোন দেবেন ফন্ট
হিউ জ্যাকম্যান–ডেবোরার সম্পর্কে এগোচ্ছে ‘অ্যামিকেবল’ সমাধান
কাবাডি বিশ্বকাপে ভারতের কাছে হারল বাংলাদেশ নারী দল
বায়োপিকে মাইলস টেলারের কাস্টিং নিয়ে ক্ষোভ জ্যাকসন কণ্যার
১৮তম নিবন্ধিত শিক্ষকদের জন্য আসছে বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তি
বাড়ল স্বর্ণের দাম, ভরিতে কত
পল্লবী থানার সামনে ৩ ককটেল বিস্ফোরণ, পুলিশসহ আহত ৩
কুমিল্লায় বিএনপির দুই পক্ষের সমাবেশ ঘিরে উত্তেজনা, বাতিল হতে পারে অনুমতি
ঢাকায় জনবল নিয়োগ দিচ্ছে বিকাশ
সময় টিভির চেয়ারম্যান মোরশেদুল ইসলামের পদত্যাগ
জে-লো–বেন অ্যাফ্লেককে নিয়ে ‘বেনিফার ৩.০’
১২০০ কোটি টাকার সাম্রাজ্যের পর ২ নতুন বাড়ি কিনলেন সাইফ
গণভোট আয়োজনের আগে প্রয়োজন আইন: সিইসি
শূকরের পর এবার সাংবাদিকদের বিপজ্জনক বললেন ট্রাম্প