শূকরের পর এবার সাংবাদিকদের বিপজ্জনক বললেন ট্রাম্প
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২২:৩৪, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
হোয়াইট হাউসে সৌদি যুবরাজকে পাশে বসিয়ে সাংবাদিককে কটূক্তি। ছবি: সংগৃহীত
নারী সাংবাদিককে ‘শূকর’ বলার বিতর্ক ঠান্ডা হওয়ার আগেই ফের সমালোচনার কেন্দ্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবারও সাংবাদিককে কটূক্তির অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। যৌন অপরাধী জেফরি এপস্টিন এবং সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগির হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন করতেই এবিসি নিউজের সাংবাদিক মেরি ব্রুসকে প্রকাশ্যে ‘বিপজ্জনক সাংবাদিক’ বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প।
মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে সৌদি আরবের যুবরাজ মহম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বসেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সেই সময় ট্রাম্প পরিবারের সঙ্গে সৌদি ব্যবসা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মেরি। তিনি জানতে চান— সৌদির সঙ্গে ট্রাম্প পরিবারের চলমান বাণিজ্যিক চুক্তি কি ‘স্বার্থের সংঘাত’ নয়?
প্রশ্ন শুনে স্পষ্টতই বিরক্ত হন ট্রাম্প। এরপরেই আরও কঠিন প্রশ্ন ছোড়েন মেরি ব্রুস—
“আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা বলছে, খাসোগিকে হত্যার অনুমতি দিয়েছেন আপনি। ৯/১১–এর ভুক্তভোগীদের পরিবারও ক্ষুব্ধ। আমেরিকানরা কেন আপনাকে বিশ্বাস করবে?”
এই প্রশ্নে ক্ষেপে গিয়ে সাংবাদিককে থামিয়ে দেন ট্রাম্প। তিনি বলেন—“এবিসি ভুয়ো খবর প্রচার করে। বাণিজ্য বিষয়ে সবচেয়ে খারাপরাও তারাই।”
ট্রাম্প আরও দাবি করেন, তার সঙ্গে ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের কোনও সম্পর্ক নেই; ব্যবসা পরিচালনা করছেন তার দুই পুত্র। অথচ সোমবারই কোম্পানিটি ঘোষণা করেছে, তারা মালদ্বীপে নতুন একটি বিলাসবহুল রিসোর্ট তৈরি করতে যাচ্ছে, যার ডেভেলপার সৌদি আরবের একটি প্রতিষ্ঠান।
খাসোগির হত্যাকাণ্ডে যুবরাজের সম্পৃক্ততা নিয়ে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট বহু আগেই প্রকাশ্যে এসেছে। তবুও ট্রাম্প দাবি করেন— সৌদি যুবরাজের কোনও ভূমিকা নেই। এবং সাংবাদিকের প্রশ্নে ‘অতিথিকে অস্বস্তিতে ফেলা হচ্ছে’ বলে অভিযোগ তোলেন তিনি।
এরপর এপস্টিন নিয়ে প্রশ্ন করতেই মেরিকে কটাক্ষ করে বলেন—“আপনি একজন বিপজ্জনক সাংবাদিক। প্রশ্নে আমার সমস্যা নেই, কিন্তু আপনার ভঙ্গি বিপজ্জনক।”
গত কয়েক দিনেই আরেক নারি সাংবাদিক ক্যাথরিন লুসির দিকে আঙুল তুলে ‘চুপ, চুপ করো শূকর’— এমন মন্তব্য করতে দেখা যায় ট্রাম্পকে। সেই ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই তুমুল বিতর্ক শুরু হয়। এবার মেরি ব্রুসকে কটূক্তির ঘটনায় আবারও সমালোচনার মুখে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
এদিকে নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, জেফরি এপস্টিনের হাজার হাজার পৃষ্ঠার গোপন নথি হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস কমিটির হাতে এসেছে। সেই নথি–ইমেলে ট্রাম্প–এপস্টিন সম্পর্ক নিয়ে নতুন প্রশ্ন উঠছে। যদিও ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি এপস্টিনকে ‘ভালভাবে চিনতেন না’ এবং তার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানতেন না।
