হাসিনা–কামালের ফাঁসির রায় আজও যাচ্ছে না মন্ত্রণালয়ে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫:৫০, ১৮ নভেম্বর ২০২৫
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের কপি আজ (১৮ নভেম্বর) সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোতে পাঠানো যাচ্ছে না। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যানের হঠাৎ অসুস্থতার কারণে এ প্রক্রিয়া স্থগিত রয়েছে বলে জানিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
এর আগে মঙ্গলবারই রায়ের নথি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের কাছে পাঠানোর কথা ছিল। রায় কপি হাতে পেলে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি, বিদেশে অবস্থানরত আসামিদের গ্রেপ্তারি প্রক্রিয়া এবং ভারতের কাছে হস্তান্তর চুক্তি সক্রিয়করণ শুরু করার প্রস্তুতিতে ছিল দুটি মন্ত্রণালয়।
গত সোমবার (১৭ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ড, উসকানি, দমন-পীড়নসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনাকে দুই অভিযোগে এবং কামালকে এক অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেন। একই মামলার আরেক আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়ায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড পেয়েছেন।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এ রায় ঘোষণা করা হয়। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। নতুন কাঠামোয় মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রথম মামলাটি দায়ের হয় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। তিন আসামির বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে আছে—উসকানি,মারণাস্ত্র ব্যবহার,আবু সাঈদ হত্যা,চানখারপুলে হত্যা ও আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানো।
মামলাটিতে ৫৪ জন সাক্ষীর জবানবন্দি, তদন্ত কর্মকর্তা থেকে গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যক্ষদর্শীরা আদালতে বীভৎসতা, অপহরণ ও হত্যার বিবরণ তুলে ধরেন। গত ২৩ অক্টোবর উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে ১৭ নভেম্বর রায়ের দিন নির্ধারণ করা হয়।
ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যানের অসুস্থতার কারণে রায় কপি পাঠানো স্থগিত হওয়ায় প্রক্রিয়ার পরবর্তী ধাপ—ইন্টারপোল নোটিশ, আন্তর্জাতিক হস্তান্তর, সীমান্ত নজরদারি—সবই সাময়িকভাবে থমকে গেছে।
ট্রাইব্যুনাল সূত্র বলছে, চেয়ারম্যান সুস্থ হয়ে দপ্তরে যোগ দিলে রায় কপি পাঠানোর কাজ দ্রুতই শুরু হবে।
