প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রদূত
নির্বাচনে ২০০ সদস্যের দল পাঠাবে ইইউ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২:৩৭, ২৮ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ২২:৫৭, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
বাংলাদেশে আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য একটি বড় প্রতিনিধিদল পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এটি হবে ২০০৮ সালের পর ইইউর প্রথম পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশন।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে এই তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার।
রাষ্ট্রদূত মিলার জানান, এই নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশনে ১৫০ থেকে ২০০ জন সদস্য থাকতে পারেন। এর মধ্যে কিছু পর্যবেক্ষক ভোটের ছয় সপ্তাহ আগে এবং বাকিরা ভোটের এক সপ্তাহ আগে বাংলাদেশে পৌঁছাবেন।
তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালের পর এই প্রথম ইইউ একটি পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল পাঠাচ্ছে।’
এছাড়া ভোটের সময় স্থানীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক নিয়োগেও ইইউ সহায়তা করবে, বলে জানান রাষ্ট্রদূত মিলার।
প্রায় এক ঘণ্টার এই বৈঠকে আলোচনায় উঠে আসে—সাংবিধানিক সংস্কার, নির্বাচন প্রস্তুতি ও স্বচ্ছতা, বিচার বিভাগ ও শ্রম খাতের সংস্কার,বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক এবং দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়া।
রাষ্ট্রদূত মিলার ‘জুলাই জাতীয় সনদকে’ গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য একটি ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দলিল’ হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, ‘এটি গণতান্ত্রিক পরিবর্তনকে মসৃণ করবে।’
তাছাড়া শ্রম আইন সংস্কার ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা জোরদারকরণকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হিসেবে আখ্যা দেন তিনি।
ইউনূস সরকারের প্রতি আস্থা জানিয়ে রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য করতে ইইউ নির্বাচন কমিশনের পাশে থাকবে।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘এটি বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পুনর্গঠনের একটি বড় সুযোগ।’
বৈঠকে উভয় পক্ষ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক আরও জোরদারের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন। এর মধ্যে রয়েছে—অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তির সম্ভাবনা,বিমান ও নৌ পরিবহন খাতে নতুন সুযোগ অনুসন্ধান,মানব পাচার ও অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধে সহযোগিতা।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস জানান, চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া টার্মিনালের উন্নয়ন ও পরিচালনায় ডেনমার্কের এ.পি. মোলার-মায়ার্সকের সঙ্গে ৮০০ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, এই বিনিয়োগে লালদিয়াকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম আধুনিক টার্মিনালে রূপান্তর করা হবে।
বৈঠকে নির্বাচনী পরিবেশ, প্রার্থীদের যোগ্যতা যাচাই ও মানবাধিকার সুরক্ষা বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়।
