অধ্যাপক আলী রিয়াজ
সরকারকে তিন ভাগে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছে কমিশন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯:৩৪, ২৮ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১৯:৩৫, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সরকারকে তিনটি ভাগে জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছে বলে জানিয়েছেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
তিনি বলেন, যে সকল বিষয় সংবিধান সংশ্লিষ্ট নয়, তা সরকার অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে পারে এবং সুপারিশের অনেক বিষয় আছে যা অফিসের আদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে৷ এ সকল বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের কোনো মতভিন্নতাও নেই। তাই এ দুটি বিষয় অধ্যাদেশ এবং অফিস আদেশের মাধ্যমে অবিলম্বে বাস্তবায়ন করার সুপারিশ করেছে কমিশন৷
কোন বিষয়গুলো অধ্যাদেশের মাধ্যমে এবং কোন বিষয়গুলো অফিস আদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা যাবে তা সুনির্দিষ্ট করে সুপারিশে উল্লেখ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি৷
আজ মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে 'জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫" বাস্তবায়নের উপায় সম্পর্কিত সুপারিশ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর শেষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক আলী রীয়াজ এসব কথা বলেন।
এসময় আলী রিয়াজ জানান, সংবিধান সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোকে আইনি ভিত্তি প্রদান এবং বাস্তবায়নের পথ নির্দেশ করার জন্যে সংবিধান সংশ্লিষ্ট ৪৮টি বিষয়ের ব্যাপারে দুটি বিকল্প প্রস্তাব সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রস্তাব দুটিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সরকার জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫–এ সন্নিবেশিত সংবিধান সংশোধনের বিষয়গুলো কার্যকর করার জন্য “জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ ২০২৫” জারি করবে।
আদেশ এবং এর তফসিলে উল্লিখিত সংবিধান সংস্কার প্রস্তাবসমূহ গণভোটে উপস্থাপন করা হবে।
আদেশ জারির পর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠিত হবে, যা সংবিধান সংস্কারের ক্ষেত্রে গাঠনিক ক্ষমতা প্রয়োগ করবে। যেখানে একটি প্রস্তাবে জাতীয় সংসদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিগণের সমন্বয়ে জাতীয় সংসদ গঠিত হওয়ার পাশাপাশি একইসঙ্গে একটি সংবিধান সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠনের কথা বলা হয়েছে।
এক প্রস্তাবে বলা হয়েছে, জুলাই জাতীয় সনদে সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক একটি পূণাঙ্গ খসড়া বিল গণভোটে উপস্থাপন করা হবে।
গণভোটে অনুমোদন পাওয়া সংবিধান সংস্কার বিল পরিষদের সহায়ক হিসেবে বিবেচিত হবে এবং পরিষদ ২৭০ দিনের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হলে বিলটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হবে।
অন্য প্রস্তাবে বলা হয়েছে, পরিষদ ২৭০ দিনের মধ্যে জুলাই জাতীয় সনদ অনুযায়ী সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন করবে এবং সংস্কার কার্যক্রম শেষ হলে পরিষদের কার্যক্রম সমাপ্ত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের সদস্যদের মধ্যে বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড.ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. মো. আইয়ুব মিয়া, সফর রাজ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম এবং ঐকমত্য গঠন প্রক্রিয়ায় যুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
