যমুনায় বাল্কহেড থেকে চাঁদাবাজি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কসহ আটক ১১
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭:১২, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে যমুনা নদীতে বালু বহনকারী বাল্কহেড থেকে চাঁদা দাবি ও আদায়ের অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, এক ইউপি সদস্যসহ মোট ১১ জনকে হাতেনাতে আটক করেছে নৌ পুলিশ।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চল ঘোড়জান ইউনিয়নের মুরাদপুর মাঝ যমুনা এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
আটক ব্যক্তিরা হলেন—ঘোড়জান ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মানিক সিকদার (৫৫), চৌহালী ছাত্র সমন্বয়ক ও স্বল্পমূল্যের চালের ডিলার আল আমিন (২৪), নজরুল ইসলাম (৪৫), শহীদুল ইসলাম (৩৫), আবদুল আলীম (৪০), শরীফুল ইসলাম (৩৫), জাহাঙ্গীর হোসেন (৩৫), ইউনুস আলী (২৬), শহীদুল ইসলাম (৪৫) এবং ফরিদ হোসেন (২৬)। সবাই উপজেলার ঘোড়জান ইউনিয়নের বাসিন্দা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, যমুনার বিভিন্ন ইজারাকৃত মহাল থেকে উত্তোলিত বালু বাল্কহেডে করে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। এই পরিবহনপথকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে একটি সংঘবদ্ধ চক্র নিয়মিতভাবে বাল্কহেড মালিক ও শ্রমিকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে আসছে।
চাঁদা না দিলে দুষ্কৃতকারীরা বাল্কহেড চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিত, এমনকি নৌযানে হামলা ও মারধরের ঘটনাও ঘটত। বিশেষ করে মুরাদপুর ও রেহাই কাউলিয়া এলাকাজুড়ে প্রতিদিন নৌকা নিয়ে এই চক্র চাঁদা তোলে বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে বালু ব্যবসার পুরো শৃঙ্খলা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল এবং নদীপথে আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল।
চৌহালী নৌ পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ আহম্মেদ জানান, শনিবার সকালে যমুনা নদীতে নিয়মিত টহল ও বিশেষ অভিযান চলমান ছিল। এমন সময় পুলিশকে ফোন করে জানানো হয় যে বাল্কহেড থেকে জোরপূর্বক চাঁদা তোলা হচ্ছে।
খবর পেয়ে নৌ পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং বাল্কহেডের ওপর থাকা চারজনকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। পরে একটি ট্রলারে করে পালানোর চেষ্টা করলে আরও ছয়জনকে ধাওয়া করে আটক করা হয়।
এ সময় ঘটনা সংশ্লিষ্ট ট্রলার ও ১০টি মোবাইল ফোন জব্দ করে নৌ পুলিশ।
ওসি বলেন, চাঁদাবাজির ঘটনায় আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে। নদীপথে চাঁদাবাজি বন্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
চৌহালীর নদীপথে দীর্ঘদিনের চাঁদাবাজি ও জলদস্যুতার অভিযোগে সাধারণ বাল্কহেড মালিক ও নৌশ্রমিকরা নৌ পুলিশের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন।
