কক্সবাজারের তিন আসনে প্রার্থী ঘোষণা, এক আসনের সিদ্ধান্ত পরে
শহিদুল ইসলাম, উখিয়া-টেকনাফ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২২:৪৩, ৩ নভেম্বর ২০২৫
						সাবেক প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমেদ,সাবেক এমপি লুৎফর রহমান কাজল,শাহজাহান চৌধুরী
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এককভাবে ২৩৪টি সংসদীয় আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে। সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
দীর্ঘ রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, আন্দোলন–সংগ্রাম ও বহুমুখী জোট আলোচনার পর বিএনপির এই প্রার্থী ঘোষণা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করেছে। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ জেলা কক্সবাজারে দলটি তিনটি আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে, আর একটি আসনের সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা হয়েছে।
কক্সবাজার-১ (চকরিয়া ও পেকুয়া): সাবেক প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমেদ
এই আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বিএনপি সরকারের সময় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।মনোনয়ন পাওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন—“চকরিয়া-পেকুয়ার মানুষ সবসময় গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার পক্ষে। আমি বিশ্বাস করি, জনগণ এবারও ধানের শীষের পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে রায় দেবে।”
দীর্ঘদিন ধরে তিনি এলাকায় জনপ্রিয় ও সংগঠক হিসেবে পরিচিত। ২০১৪ সালের পর রাজনৈতিক প্রতিকূল সময়েও মাঠে সক্রিয় ছিলেন। ফলে এবারের প্রার্থিতা স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
কক্সবাজার-২ (মহেশখালী ও কুতুবদিয়া): প্রার্থীর নাম পরে ঘোষণা
দুই দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী ও কুতুবদিয়া নিয়ে গঠিত কক্সবাজার-২ আসনে এখনও প্রার্থী চূড়ান্ত হয়নি।
মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন—“এই আসনে কয়েকজন সম্ভাব্য প্রার্থীর বিষয়ে আলোচনা চলছে। স্থানীয় নেতৃত্ব ও তৃণমূলের মতামত নিয়ে পরে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে।”
এ আসনে একাধিক প্রভাবশালী নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন বলে জানা গেছে। দ্বীপবাসীর প্রত্যাশা, বিএনপি এমন প্রার্থী দেবেন যিনি স্থানীয়ভাবে গ্রহণযোগ্য ও জনগণের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত।
কক্সবাজার-৩ (সদর, রামু ও ঈদগাঁহ): সাবেক এমপি লুৎফর রহমান কাজলএই আসনে বিএনপি মনোনয়ন দিয়েছে দলের মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফর রহমান কাজলকে।
তিনি প্রতিক্রিয়ায় বলেন—“দলের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। ইনশাআল্লাহ, কক্সবাজার-৩ আসনের জনগণ ধানের শীষের জয় নিশ্চিত করবে। আমি সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে থেকেছি, এবারও তাদের আস্থার প্রতিদান দিতে চাই।”
২০১৮ সালের নির্বাচনে এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি অল্প ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন। তবে মাঠপর্যায়ে তার সাংগঠনিক দক্ষতা ও ধারাবাহিক উপস্থিতি আবারও তাকে মনোনয়নের পথে এগিয়ে দিয়েছে।
কক্সবাজার-৪ (উখিয়া ও টেকনাফ):রাজনীতিক শাহজাহান চৌধুরী
সীমান্তঘেঁষা উখিয়া ও টেকনাফ নিয়ে গঠিত এই আসনে বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন দলের সিনিয়র নেতা, সাবেক হুইপ ও চারবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী।
তিনি বলেন—“আমি জনগণের রাজনীতি করি। উখিয়া-টেকনাফের মানুষের কল্যাণে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি এবং ভবিষ্যতেও করব। বিএনপির জয় মানে জনগণের জয়।”
স্থানীয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, মাদকের বিরুদ্ধে তার কঠোর অবস্থান ও রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় সক্রিয় ভূমিকা এবারও ভোটারদের মন জয় করতে পারে।
