৪ বছর পর কাবুলে দূতাবাস চালু দিল্লির

তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির ভারত সফরের কয়েক দিন পরই আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে দূতাবাস চালু করল দিল্লি। ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর যে দূতাবাসটি বন্ধ হয়েছিল, চার বছর পর সেটি পুনরায় চালুর মাধ্যমে ভারত-আফগান সম্পর্ক নতুন এক মাইলফলক ছুঁলো বলে কূটনৈতিক মহল মনে করছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাম্প্রতিক ভারত সফরের সময় ঘোষিত সিদ্ধান্তের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সরকার তাৎক্ষণিকভাবে কাবুলের ‘টেকনিক্যাল মিশনকে’ পূর্ণাঙ্গ দূতাবাসে রূপান্তর করছে। এই পদক্ষেপ আফগানিস্তানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও গভীর করার ভারতের দৃঢ় অঙ্গীকারের প্রতিফলন।

সরকারি সূত্র জানায়, আপাতত একজন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স (সিডিএ) নিয়োগ করা হবে, যিনি রাষ্ট্রদূত নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত দূতাবাস পরিচালনা করবেন। ভবিষ্যতে কাবুলে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারত রাষ্ট্রদূত পাঠাতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।

২০২১ সালের আগস্টে তালেবান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির সরকারকে উৎখাত করলে কাবুলে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে। সে সময় ভারত দ্রুত দূতাবাস ও চারটি কনস্যুলেট (মাজার-ই-শরিফ, জালালাবাদ, কান্দাহার ও হেরাত) বন্ধ করে কর্মীদের সরিয়ে নেয়। পরে ২০২২ সালের জুনে একটি কারিগরি দল পাঠানো হয় মানবিক সহায়তা ও কনস্যুলার সেবা দিতে।

‘ডুরান্ড লাইন’ ঘিরে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকায়, কাবুলে ভারতের উপস্থিতি দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক ভারসাম্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। ইরান, চীন, রাশিয়া ও উপসাগরীয় দেশগুলো ইতিমধ্যে তালেবানের সঙ্গে বিভিন্ন মাত্রায় সম্পর্ক বজায় রেখেছে। এর মধ্যে রাশিয়াই একমাত্র দেশ, যারা তালেবানকে আফগানিস্তানের আনুষ্ঠানিক সরকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

১০ অক্টোবর নয়াদিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর ও তালেবান মন্ত্রী মুত্তাকির বৈঠকের পর থেকেই দূতাবাস পুনরায় খোলার সিদ্ধান্ত স্পষ্ট হয়। কাতারের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর এই সিদ্ধান্ত আরও দ্রুত বাস্তবায়িত হয়।

বিশ্লেষকদের মতে, আফগানিস্তানে ভারতের কূটনৈতিক প্রত্যাবর্তন মধ্য এশিয়া–দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে নতুন ভারসাম্য সৃষ্টি করতে পারে।