নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে বরখাস্ত করলেন নেতানিয়াহু
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪:৫৯, ২২ অক্টোবর ২০২৫

বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ত্জাছি হানেগবি। ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ত্জাছি হানেগবিকে পদ থেকে বরখাস্ত করেছেন। কাতারে বিমান হামলা ও গাজা সিটি দখল অভিযানসহ একাধিক নীতিগত ইস্যুতে দ্বন্দ্বের জেরেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট ও আল জাজিরা।
সরকারি সূত্র জানায়, মঙ্গলবার নেতানিয়াহু হানেগবিকে জানান—জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের (NSC) নতুন প্রধান নিয়োগ দেওয়া হবে, ফলে তার দায়িত্বকাল শেষ হচ্ছে।
হানেগবি নিজেও বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, “ইসরায়েলের সাম্প্রতিক ব্যর্থতাগুলো নিয়ে একটি বিস্তারিত তদন্ত হওয়া উচিত, বিশেষ করে ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলা আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থার বড় ঘাটতি প্রকাশ করেছে।”
ইসরায়েলি চ্যানেল–১২-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত মাসে কাতারের রাজধানী দোহায় হামাস নেতাদের ওপর বিমান হামলা চালানো এবং গাজা সিটি দখলের প্রস্তাব নিয়েই প্রধানমন্ত্রী ও নিরাপত্তা উপদেষ্টার মধ্যে তীব্র বিরোধ দেখা দেয়।
হানেগবি মন্ত্রিসভায় প্রকাশ্যেই ওই পরিকল্পনার বিরোধিতা করে বলেন,“গাজা সিটি দখল করা হলে ইসরায়েলি বন্দিদের জীবনের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যাবে। সেনাপ্রধান ইয়াল জামিরের সঙ্গে আমি একমত—এ অভিযান অতি ঝুঁকিপূর্ণ।”
নেতানিয়াহুর দপ্তর জানিয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের নতুন প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিচ্ছেন গিল রেইচ, যিনি এতদিন পরিষদের উপপ্রধান ছিলেন।হানেগবি প্রায় তিন বছর ধরে এনএসসি–র প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি লিকুদ দলের ঘনিষ্ঠ নেতা এবং নেতানিয়াহুর পুরোনো মিত্র হিসেবেও পরিচিত।
গত ৯ সেপ্টেম্বর দোহায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় পাঁচ হামাস নেতা এবং এক কাতারি নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিহত হন। সেই হামলার পর বহু দেশ ইসরাইলের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানায়।
বিশ্লেষকদের মতে, হানেগবিকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেতানিয়াহুর প্রশাসনে গভীর অভ্যন্তরীণ মতপার্থক্যের প্রতিফলন। গাজা ও কাতার ইস্যুতে কূটনৈতিকভাবে চাপের মুখে থাকা অবস্থায় এই পদক্ষেপ রাজনৈতিক সংকেতও বহন করছে।
আল জাজিরা, রয়টার্স ও জেরুজালেম পোস্ট-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারের ভেতরকার দ্বন্দ্ব এখন ক্রমেই প্রকাশ্য হয়ে উঠছে, যা গাজা যুদ্ধপরবর্তী পুনর্গঠন পরিকল্পনায় নেতানিয়াহুর অবস্থানকে দুর্বল করতে পারে।