হামাসের ফেরত দেওয়া দুই ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ শনাক্ত করল তেল আবিব
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১২:৪৩, ২২ অক্টোবর ২০২৫

সার্জেন্ট তামির আদার (বাঁয়ে) আরি জালমানোভিচ
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, হামাসের মাধ্যমে ফেরত পাওয়া দুই জিম্মির মরদেহ শনাক্ত করা হয়েছে। যে দুই জিম্মির মরদেহ পাওয়া গেছে তারা হলেন ৮৫ বছর বয়সী আরি জালমানোভিচ এবং ৩৮ বছর বয়সী মাস্টার সার্জেন্ট তামির আদার।
গতকাল এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, জালমানোভিচকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ‘কিব্বুজৎ নির ওজ’-এর তার নিজ বাড়ী থেকে অপহরণ করা হয় এবং ১৭ নভেম্বর বন্দিদশায় তার মৃত্যু ঘটে। অন্যদিকে তামির আদার একই কিব্বুজৎ-এলাকার নিরাপত্তা দলের সদস্য ছিলেন। তিনি হামলার দিন হামাস যোদ্ধাদের প্রতিরোধ করতে গিয়ে নিহত হন।
হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপে এখন পর্যন্ত নিহত ২৮ ইসরায়েলি জিম্মির মধ্যে ১৫ জনের মরদেহ ফেরত দেওয়া হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় জালমানোভিচ ও আদারের মরদেহ রেড ক্রসের মাধ্যমে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সেনাদের হাতে হস্তান্তর করা হয়। পরে সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে মরদেহগুলো ইসরায়েলের ভেতরে প্রবেশ করে এবং সেগুলো তেল আবিবে আনুষ্ঠানিক শনাক্তকরণের জন্য নেওয়া হয়েছে।
এর আগে হামাস একবার ভুলবশত একজন ফিলিস্তিনির মরদেহ ইসরায়েলের কাছে হস্তান্তর করেছিল বলে স্বীকার করেছিল। তাঁদের দাবি ছিল, ধ্বংসস্তূপের নিচে মরদেহ খুঁজে পাওয়ার জটিলতার কারণেই এমনটি হয়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী—বেঁচে থাকা ২০ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে ইতিমধ্যেই মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তবে সব মৃত জিম্মির মরদেহ ফেরত না দেওয়ায় ইসরায়েলে ক্ষোভ বাড়ছে। আইডিএফও স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে—হামাসকে অবশ্যই চুক্তির শর্ত পূরণ করে বাকি সব মরদেহ ফিরিয়ে দিতে হবে।
হামাসের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে—ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে বিধ্বস্ত ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেক মরদেহ চাপা পড়ে থাকায় খুঁজে বের করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
চুক্তির প্রথম ধাপ অনুযায়ী, একেকজন ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহের বিনিময়ে ইসরায়েল ১৫টি ফিলিস্তিনি মরদেহ ফিরিয়ে দিয়েছে, পাশাপাশি মুক্তি দিয়েছে ২৫০ জন ফিলিস্তিনি বন্দি ও গাজার ১ হাজার ৭শ’১৮ জন আটক ব্যক্তিকে।
এ ছাড়াও এই ধাপে গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ বেড়েছে। কিছু এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনী আংশিকভাবে পিছিয়েছে এবং যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। যদিও সপ্তাহান্তে দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ তুলে সংঘর্ষে জড়িয়েছে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলায় দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এর জবাবে আইডিএফ গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে।
হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, এরপর থেকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৬৮ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, যা জাতিসংঘও বিশ্বাসযোগ্য বলে বিবেচনা করে।