বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

| ৮ কার্তিক ১৪৩২

সংঘাতের নেপথ্যে ভারতের ভূমিকা নেই

সম্পর্ক আরও নিবিড় হবে : আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১২:২৪, ২২ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্ক আরও নিবিড় হবে : আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী

আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মৌলভি মহম্মদ ইয়াকুব মুজাহিদ। ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তান যখন সাম্প্রতিক সীমান্ত সংঘাতের দায় ভারতের ঘাড়ে চাপাতে ব্যস্ত, তখন একেবারে উল্টো সুরে কথা বললেন আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মৌলভি মহম্মদ ইয়াকুব মুজাহিদ। মঙ্গলবার আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি স্পষ্ট জানান— “রক্তাক্ত সংঘাতের নেপথ্যে নয়াদিল্লির কোনো ভূমিকা নেই।” বরং ইসলামাবাদকেই নিশানা করে তার মন্তব্য, “ভারত ছায়াযুদ্ধ চালাচ্ছে”— এমন অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

ইয়াকুব জোর দিয়ে বলেন, আফগানিস্তান এখন স্বাধীন দেশ এবং তাদের পররাষ্ট্রনীতি তারা নিজেরাই নির্ধারণ করে। 
তিনি বলেন, “আমরা স্বাধীন জাতি। জাতীয় স্বার্থে ভবিষ্যতে ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করা হবে।”

এই বক্তব্যকে কূটনৈতিক মহল আফগানিস্তান-ভারত সম্পর্কে নতুন এক উষ্ণতার ইঙ্গিত হিসেবে দেখছে। বিশেষ করে এমন সময়ে, যখন পাকিস্তান সীমান্তে বিমান হামলা চালিয়ে দুই দেশের সম্পর্ককে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে।

 ইয়াকুব হচ্ছেন প্রয়াত তালিবান প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা মুহম্মদ ওমরের পুত্র। তিনি তালিবানের অন্দরে শক্তিশালী কিন্তু পাকিস্তান-ঘনিষ্ঠ ‘হাক্কানি নেটওয়ার্ক’-এর বিরোধী হিসেবে পরিচিত। এই নেটওয়ার্কের নেতৃত্বে আছেন আফগান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজউদ্দিন হাক্কানি এবং শরিয়তি বিচারব্যবস্থার প্রধান আব্দুল হাকিম হক্কানি।

সূত্রমতে, ২০১৩ সালে মার্কিন বিমানহানায় মোল্লা ওমর নিহত হওয়ার পর ইয়াকুবকেই প্রথমে তালিবানের নেতৃত্বে বসানোর প্রস্তাব উঠেছিল। তবে যুদ্ধক্ষেত্রে অভিজ্ঞতার অভাবে তিনি নিজেই সেই দায়িত্ব থেকে সরে গিয়ে বর্তমান সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লা আখুন্দজাদার নাম প্রস্তাব করেন।

গত ৯ অক্টোবর পাকিস্তান বায়ুসেনা কাবুলে বিমানহানা চালায়। পরদিন সীমান্তসংলগ্ন পকতিকা প্রদেশের মারঘি বাজারে দ্বিতীয় দফা হামলা হয়—যেদিনই আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি ভারত সফর শুরু করেন। পাকিস্তানের দাবি, হামলার লক্ষ্য ছিল টিটিপি (তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান)-এর ঘাঁটি।

কিন্তু কাবুল পাল্টা জানায়, এসব হামলায় বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এবং এটি আফগান সার্বভৌমত্বের স্পষ্ট লঙ্ঘন। এর জবাবে ইয়াকুবের বাহিনী সীমান্তের ডুরান্ড লাইনে পাল্টা অভিযান চালায়। পরে কাতারের রাজধানী দোহায় দু’দেশের মধ্যে সাময়িক সংঘর্ষবিরতি চুক্তি হয়।

তবে আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী এই চুক্তির স্থায়িত্ব নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, “আন্তর্জাতিক মহলকে এখন নজর রাখতে হবে পাকিস্তান তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে কি-না।”
 

আরও পড়ুন