শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

| ১১ আশ্বিন ১৪৩২

ট্রাম্পকে ‘বর্ণবাদী’ ও ‘ইসলামবিদ্বেষী’ বললেন লন্ডনের মেয়র সাদিক

সমাজকাল ডেস্ক

প্রকাশ: ১১:২০, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১১:২৩, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ট্রাম্পকে ‘বর্ণবাদী’ ও ‘ইসলামবিদ্বেষী’ বললেন লন্ডনের মেয়র সাদিক


জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছেন লন্ডনের মেয়র সাদিক খান। ট্রাম্প লন্ডনে শরিয়াহ আইন চালুর পরিকল্পনা রয়েছে বলে দাবি করেছিলেন। এর জবাবে খান ট্রাম্পকে বর্ণবাদী, লিঙ্গবৈষম্যমূলক, নারীবিদ্বেষী ও ইসলামবিদ্বেষী আখ্যা দিয়েছেন।

ট্রাম্পের অভিযোগ ও খানের জবাবগত মঙ্গলবার জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে ট্রাম্প সাদিক খানকে ‘ভয়ানক মেয়র’ উল্লেখ করে দাবি করেন, লন্ডন ‘শরিয়াহ আইন’ চালুর পথে এগোচ্ছে। এর জবাবে সাদিক খান বুধবার সাংবাদিকদের বলেন— “মানুষ ভাবছে, কেন এই মুসলিম মেয়র, যিনি একটি উদার, বহু সংস্কৃতির, প্রগতিশীল ও সফল শহর পরিচালনা করছেন, তিনি ট্রাম্পের মাথায় ভাড়া ছাড়া বাস করছেন?”
তিনি আরও যোগ করেন, ট্রাম্প বারবারই প্রমাণ করছেন যে তিনি বর্ণবাদী, যৌনবৈষম্যমূলক, নারীবিদ্বেষী এবং ইসলামবিদ্বেষী।

ব্রিটিশ সরকারের প্রতিক্রিয়া
লন্ডন সিটি হলের পক্ষ থেকে জানানো হয়—
“লন্ডন বিশ্বের শ্রেষ্ঠ শহর। এটি যুক্তরাষ্ট্রের অনেক শহরের চেয়ে নিরাপদ। আমরা আনন্দিত যে রেকর্ড সংখ্যক মার্কিন নাগরিক এখানে বসবাস শুরু করছেন।”
যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব ওয়েস স্ট্রিটিং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন,
“সাদিক খান লন্ডনে শরিয়াহ আইন চাপিয়ে দিতে চান না। তিনি প্রাইড মিছিলে অংশ নেন, বৈচিত্র্য ও ভিন্ন মতের প্রতি সম্মান দেখান এবং লন্ডনের পরিবেশ, পরিবহন ও নিরাপত্তা উন্নয়নে কাজ করছেন।”

শরিয়াহ আইন নিয়ে বিভ্রান্তি
২০১৯ সালে যুক্তরাজ্য সরকারের এক নথি অনুসারে, দেশটিতে ১৯৮০-এর দশক থেকে শরিয়াহ কাউন্সিল রয়েছে। তবে এসব কাউন্সিল কেবল মুসলিমদের পারিবারিক ও বিবাহবিচ্ছেদ সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানে কাজ করে। এগুলো আইনি বা সাংবিধানিক কোনো ক্ষমতা রাখে না, ফলে তাদের সিদ্ধান্ত আইনত বাধ্যতামূলক নয়।

দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব
সাদিক খান ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বন্দ্ব নতুন নয়। ২০১৬ সালে প্রথমবার ট্রাম্প যুক্তরাজ্যে গেলে লন্ডনে তার আগমনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অনুমোদন করেছিলেন খান, যেখানে আকাশে ওড়ানো হয়েছিল কুখ্যাত “ট্রাম্প বেবি” বেলুন।
২০১৫ সালে ট্রাম্প মুসলিমদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তখনই খান এটিকে ‘অগ্রহণযোগ্য নীতি’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন।

পরে ট্রাম্প পাল্টা জবাব দেন— “আমি এসব বিবৃতি মনে রাখব। এগুলো খুব বাজে মন্তব্য।”
এভাবেই টানা এক দশক ধরে দুজনের মধ্যে বাকযুদ্ধ চলছে।
জাতিসংঘের মঞ্চ থেকে শুরু করে লন্ডনের রাস্তায় প্রতিবাদ—ট্রাম্প ও সাদিক খানের দ্বন্দ্ব আজ বৈশ্বিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। যেখানে ট্রাম্প শরিয়াহ আইনকে কেন্দ্র করে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন, সেখানে সাদিক খান লন্ডনকে বৈচিত্র্য, নিরাপত্তা ও প্রগতিশীলতার প্রতীক হিসেবে তুলে ধরছেন।

সম্পর্কিত বিষয়:

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন