বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

| ৮ কার্তিক ১৪৩২

 জন্মদিনে যাদের মনে রাখি – ২২ অক্টোবর

সমাজকাল ডেস্ক

প্রকাশ: ১১:৪৬, ২২ অক্টোবর ২০২৫

 জন্মদিনে যাদের মনে রাখি – ২২ অক্টোবর

নোবেলজয়ী জর্জ ওয়েলস বিডেল। ছবি: সংগৃহীত

আজকের দিনে জন্মেছেন বিশ্বজুড়ে এমন অনেক প্রতিভা, যাদের সৃজনশীলতা, সংগ্রাম আর অবদান মানবসভ্যতার ইতিহাসে অনন্য হয়ে আছে। সংগীত, সাহিত্য, বিজ্ঞান, রাজনীতি ও চলচ্চিত্রের নানা অঙ্গনে তাদের সাফল্য আজও আমাদের অনুপ্রেরণা দেয়।

জর্জ ওয়েলস বিডেল
নোবেলজয়ী মার্কিন জেনেটিসিস্ট বিডেল "এক জিন এক এনজাইম" তত্ত্বের মাধ্যমে আধুনিক জিনতত্ত্বে বিপ্লব ঘটান।
ইতিহাসের পাতায় আজকের জন্মদিন

১৫১১ – এরাসমুস রাইনহোল্ড
জার্মান গণিতবিদ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানী রাইনহোল্ড ছিলেন টাইকো ব্রাহে-পূর্ব ইউরোপের অন্যতম প্রধান তারকা পর্যবেক্ষক। কপারনিকাসের সৌরকেন্দ্রিক তত্ত্বের প্রতি তিনি গভীর আগ্রহী ছিলেন এবং তা ব্যবহার করে "প্রুসিয়ান টেবিল" নামে গ্রহগত গতিপথ নির্ণয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্যোতির্বিদ্যা গ্রন্থ রচনা করেন।

১৮১১ – ফ্রান্‌ৎস লিস্ট
ঊনবিংশ শতকের কিংবদন্তি হাঙ্গেরীয় সুরকার, পিয়ানোবাদক ও সংগীত শিক্ষক ফ্রান্‌ৎস লিস্ট ছিলেন রোমান্টিক যুগের এক বিস্ময়। তার রচনায় সুর ও আবেগের মেলবন্ধন ইউরোপীয় সংগীতের গতিপথই বদলে দেয়। সমসাময়িকরা তাঁকে ‘পিয়ানোর জাদুকর’ বলে আখ্যা দিতেন।

১৮১৮ – লিকন্টে দ্য লিসলে
ফরাসি কবি ও লেখক দ্য লিসলে ছিলেন "পারনাসিয়ান" সাহিত্য আন্দোলনের অগ্রগণ্য ব্যক্তি। তাঁর কবিতায় বাস্তবতা, ক্লাসিক সৌন্দর্যবোধ ও মানবিক সংবেদন মিলে তৈরি হয় এক নতুন কাব্যধারা।

১৮৭০ – ইভান বুনিন
রাশিয়ার প্রথম সাহিত্য নোবেলজয়ী ইভান বুনিন তাঁর গদ্যে মানবমনের সূক্ষ্মতা ও রুশ সমাজের পরিবর্তনের ছবি এঁকেছেন অনুপম ভঙ্গিতে। দ্য ভিলেজ ও দ্য জেন্টলম্যান ফ্রম সান ফ্রান্সিসকো তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনা।

১৮৭৮ – হরিদাস সিদ্ধান্তবাগীশ
ভারতীয় স্মার্ত পণ্ডিত হরিদাস সিদ্ধান্তবাগীশ ছিলেন দর্শন ও বেদান্তচর্চার বিশিষ্ট শিক্ষক। তার গবেষণা ও আধ্যাত্মিক প্রবন্ধগুলো সংস্কৃত সাহিত্যের অঙ্গনে মূল্যবান সম্পদ হয়ে আছে।

১৮৮১ – ক্লিনটন জোসেফ ডেভিসন
আমেরিকান পদার্থবিজ্ঞানী ডেভিসন ইলেকট্রনের তরঙ্গ প্রকৃতি আবিষ্কারের জন্য ১৯৩৭ সালে নোবেল পুরস্কার পান। তাঁর গবেষণা আধুনিক কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞানের ভিত্তি দৃঢ় করে।

১৮৮৭ – জন রিড
মার্কিন সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও বিপ্লবী জন রিড ছিলেন Ten Days That Shook the World বইয়ের লেখক—যা রাশিয়ার বলশেভিক বিপ্লবের এক জীবন্ত দলিল। তিনি আমেরিকান কমিউনিস্ট পার্টির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হিসেবেও ইতিহাসে স্থান পেয়েছেন।

১৯০০ – আসফাকউল্লা খান
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্নিবীজ আসফাকউল্লা খান ছিলেন চরমপন্থী বিপ্লবী দলের সাহসী সদস্য। কাকোরি ষড়যন্ত্র মামলায় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়ে তিনি দেশপ্রেমের প্রতীক হয়ে আছেন।

১৯০১ – মোহাম্মদ সিরাজুদ্দীন কাসিমপুরী
বাংলার লোকসাহিত্য সংগ্রাহক ও গবেষক কাসিমপুরী গ্রামীণ জীবনের অজস্র গান, গল্প ও প্রবাদ রেকর্ড করে রেখেছেন। তাঁর কর্মবাংলা সংস্কৃতির শিকড় সংরক্ষণের এক অমূল্য প্রয়াস।

১৯০৩ – জর্জ ওয়েলস বিডেল
নোবেলজয়ী মার্কিন জেনেটিসিস্ট বিডেল "এক জিন এক এনজাইম" তত্ত্বের মাধ্যমে আধুনিক জিনতত্ত্বে বিপ্লব ঘটান।

১৯১৯ – ডোরিস লেসিং
ইরানি বংশোদ্ভূত ইংরেজ লেখক ডোরিস লেসিং নোবেল পুরস্কার পান ২০০৭ সালে। তাঁর উপন্যাস The Golden Notebook নারী-অস্তিত্ব, রাজনীতি ও মানসিক জটিলতা নিয়ে রচিত এক অনন্য সৃষ্টি।

১৯৩৫ – কাদের খান
বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা, চিত্রনাট্যকার ও কৌতুকাভিনেতা কাদের খান অভিনয় করেছেন তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে। তাঁর সংলাপ ও কৌতুক সংবেদন ভারতীয় চলচ্চিত্রে অমর হয়ে আছে।

১৯৪৪ – খুরশিদ আলম
বাংলাদেশের কণ্ঠশিল্পী খুরশিদ আলম ষাট ও সত্তরের দশকে চলচ্চিত্র সংগীতকে জনপ্রিয় করে তোলেন। তার কণ্ঠে “চাঁদনী রাতে সবাই গেছে বনে” কিংবা “এমনই একদিন তুমি চলে যাবে”—অসংখ্য গান আজও স্মৃতিমধুর।

১৯৪৬ – দীপক চোপড়া
ভারতীয়-আমেরিকান চিকিৎসক ও লেখক দীপক চোপড়া "নিউ এজ স্পিরিচুয়ালিজম"-এর প্রতীক। তাঁর বই ও বক্তৃতা স্বাস্থ্য, যোগ ও আত্মশক্তির সমন্বয়ে বিশ্বজুড়ে কোটি মানুষের মন জয় করেছে।

১৯৫০ – ময়ুখ চৌধুরী
বাংলাদেশি কবি, সমালোচক ও গবেষক ময়ুখ চৌধুরী আধুনিক কবিতার এক গভীর স্বর। তার কবিতায় দেখা যায় মানুষ, প্রকৃতি ও সময়ের দার্শনিক অন্তর্দৃষ্টি।

১৯৫১ – অনীশ দেব
বাংলা রহস্য, রোমাঞ্চ ও কল্পবিজ্ঞানের জনপ্রিয় লেখক অনীশ দেব ছিলেন বিজ্ঞানের ভাষায় গল্প বলার পথিকৃৎ। তার কলমে সৃষ্ট রহস্যজগত তরুণ পাঠকের কাছে এক অনন্য আনন্দ।

১৯৬৬ – ভ্যালেরিয়া গলিনো
ইতালীয় অভিনেত্রী ও পরিচালক গলিনো Rain Man ও Hot Shots! ছবিতে তাঁর অসাধারণ অভিনয়ের জন্য পরিচিত।

১৯৬৭ – কিটু গিদওয়ানি
ভারতীয় অভিনেত্রী ও মডেল কিটু গিদওয়ানি হিন্দি ধারাবাহিক ও সমকালীন থিয়েটারে এক গুরুত্বপূর্ণ নাম।

১৯৮৫ – হাদিসে
তুর্কি গায়িকা ও গীতিকার হাদিসে ইউরোভিশনসহ আন্তর্জাতিক মঞ্চে খ্যাতি অর্জন করেছেন তার প্রাণবন্ত পারফরম্যান্সে।

১৯৮৮ – পরিণীতি চোপড়া
বলিউড অভিনেত্রী পরিণীতি চোপড়া তার Ishaqzaade ও Sandeep Aur Pinky Faraar সিনেমায় অভিনয়ের জন্য প্রশংসিত। তিনি সমসাময়িক নারীর স্বাধীনতা ও আত্মবিশ্বাসের প্রতীক হয়ে উঠেছেন।

বিজ্ঞান থেকে সাহিত্য, সঙ্গীত থেকে চলচ্চিত্র—২২ অক্টোবর জন্ম নেওয়া এই সব মানুষ তাঁদের স্বপ্ন ও শ্রম দিয়ে নিজেদের দেশ ও মানবসভ্যতাকে সমৃদ্ধ করেছেন। সমাজকাল আজ স্মরণ করছে তাঁদের অবদানকে—শ্রদ্ধায়, ভালোবাসায়, কৃতজ্ঞতায়।

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন