ফ্রান্সে প্রথমবারের মতো মুদ্রা ‘ফ্রাঁ’ চালু হয়
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬:১৪, ৫ ডিসেম্বর ২০২৫
মানবসভ্যতার বহু গুরুত্বপূর্ণ মোড়, যুদ্ধ–বিপ্লব, আবিষ্কার, স্বাধীনতা ও রাজনৈতিক পুনর্বিন্যাস—সবই ঘটে গেছে ইতিহাসের নানা দিনে। আজকের দিনও তার ব্যতিক্রম নয়। মধ্যযুগ থেকে আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থা—বহু আলোচিত ও তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনাই যুক্ত রয়েছে এই দিনে। নিচে ক্রমানুসারে সেসব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার একটি বিস্তৃত ঝলক তুলে ধরা হলো।
চতুর্দশ শতকে ১৩৬০ সালে ফ্রান্সে প্রথমবারের মতো মুদ্রা ‘ফ্রাঁ’ চালু হয়, যা দেশটির অর্থনৈতিক পরিচয়ের অন্যতম ভিত্তি গড়ে দেয়।
ঠিক এক শতাব্দী পর ১৪৫৬ সালে নেপলস ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রায় ৩৫ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে—ইউরোপের ইতিহাসে অন্যতম বড় মানবিক বিপর্যয় এটি।
১৭৫৭ সালে প্রুশিয়ার সেনাবাহিনীর কাছে অস্ট্রিয়া পরাজিত হওয়া ইউরোপীয় শক্তির সমীকরণ পাল্টে দেয়। আর ১৭৬৬ সালের লন্ডনে প্রথম নিলাম ডাক শুরু হওয়া আধুনিক ব্যবসা–বাণিজ্যের অন্যতম অধ্যায়।
১৭৯১ সালে ভিয়েনায় মৃত্যুবরণ করেন পশ্চিমা সুরসৃষ্টির কিংবদন্তি ভোলফগাং আমাদেউস মোৎসার্ট, যার বয়স তখন মাত্র ৩৫।
পরের বছর ১৭৯২-তে যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন জর্জ ওয়াশিংটন; আর ১৮০৪ সালে একই সম্মান পান টমাস জেফারসন।
১৮১২ সালে রাশিয়া অভিযানে পরাজয়ের পর নেপোলিয়ন বোনাপার্টের ফ্রান্সে ফিরে আসা ইউরোপীয় রাজনীতিতে নতুন বাঁক তৈরি করে।
১৮৪৬ সালে দুদু মিয়ার নেতৃত্বে নীলকুঠি আক্রমণের আন্দোলন উপমহাদেশে কৃষক-বিরোধী শোষণের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবাদ হিসেবে পরিচিত।
১৮৫৪ সালে অ্যারোন অ্যালেন রিভলভিং থিয়েটার চেয়ার প্যাটেন্ট করেন এবং ১৮৭৯ সালে প্রথম স্বয়ংক্রিয় টেলিফোন সুইচিং সিস্টেম প্যাটেন্ট হয়, যা আধুনিক যোগাযোগব্যবস্থার সূচনা নির্দেশ করে।
১৯১৭ সাল ছিল দ্বৈত মাইলফলক—এই দিনে ফিনল্যান্ড স্বাধীনতা লাভ করে, এবং রাশিয়ার বিপ্লবী সরকার জার্মানির সঙ্গে সন্ধি স্বাক্ষর করে।
১৯৩২ সালে জার্মান বংশোদ্ভুত বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন পান যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা। ১৯৩৩ সালে উটাহ যুক্তরাষ্ট্রের ৩৬তম অঙ্গরাজ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয় এবং ১৯৩৫ সালে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হয় মেট্রো সিনেমা হল, যা উপমহাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসে বিশেষ স্থান দখল করে আছে।
১৯৪১ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইংল্যান্ড ফিনল্যান্ড, হাঙ্গেরী ও রোমানিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। আর ১৯৪৩ সালে দুপুর ১১টা ৪৭ মিনিটে জাপানি বিমান কলকাতায় প্রথম বোমাবর্ষণ করে।
১৯৫০ সালে কোরিয়ার যুদ্ধে চীনা সেনারা পিয়ংইয়ং-এ প্রবেশ করে। ১৯৫৫ সালে এডগার নিক্সন ও রোসা পার্কস মন্টেগোমারীতে শুরু করেন ঐতিহাসিক বাস বয়কট আন্দোলন, যা মার্কিন নাগরিক অধিকার আন্দোলনের সূচনা জোরদার করে। ১৯৬৯ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পাকিস্তানের নামকরণ করেন “বাংলাদেশ”—জাতির আত্মপরিচয়ের নতুন জন্মলগ্ন।
১৯৭১ সালের একই দিনে ভারত–পাকিস্তান যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে মিত্রবাহিনী গঠন করা হয় এবং মৌলভীবাজারের জুড়ী এলাকা শত্রুমুক্ত হয়। ১৯৭৭ সালে মিশরের প্রেসিডেন্ট সাদাত একাধিক আরব রাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেন।
১৯৮৩ সালে আর্জেন্টিনায় সামরিক জান্তার পতন গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধারের পথ করে দেয়। ১৯৯২ সালে আলবেনিয়াকে মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা এবং ১৯৯৯ সালে ব্যাংককে আকাশ ট্রেন সার্ভিস চালুর মাধ্যমে নগর পরিবহনে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়। ১৯৯৬ সালে ম্যাডেলিন অলব্রাইট যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম নারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হন।
আর ২০১৩ সালে মানবতার বাতিঘর, দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী সংগ্রামের নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা পৃথিবীকে বিদায় জানান—সমগ্র বিশ্ব শোকাবদ্ধ হয় তার মৃত্যুতে।
ইতিহাসের প্রতিটি ঘটনা আজও মানবসমাজকে শেখায় সময়, রাজনীতি, প্রযুক্তি এবং মানবাধিকার কতভাবে সভ্যতাকে নতুন পথে এগিয়ে নিতে পারে।
