৫ ডিসেম্বর, ‘বাংলাদেশ’ নামকরণের দিন
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫:৫৪, ৫ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ২১:২০, ৫ ডিসেম্বর ২০২৫
‘বাংলাদেশ’ নামকরণের দাবি চূড়ান্ত রূপ লাভ করে ১৯৬৯ সালের ২৮ নভেম্বর, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের এক ভাষণের পর। ‘পূর্ব পাকিস্তান’ নামটি যারা বদলাতে চাইছিলেন তাদের যুক্তির প্রধান ভিত্তি ছিলো, যেহেতু পশ্চিম পাকিস্তানের এক ইউনিট ভেঙে গেছে এবং প্রশাসনিক ইউনিট হিসেবে সিন্ধ, বেলুচিস্তান, পাঞ্জাব এবং উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চলের সাবেক প্রাদেশিক নাম পুনর্জীবিত হচ্ছে, তাই পাকিস্তানের পাঁচটি প্রদেশের মধ্যে সবচেয়ে পূর্বে অবস্থিত প্রদেশের নাম আর ‘পূর্ব পাকিস্তান’ রাখা সংগত হবে না।
ওই বছরেরই ৫ ডিসেম্বর, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভাতে তৎকালীন নেতারা এ অঞ্চলের জন্য বিভিন্ন নাম প্রস্তাব করেন। উল্লেখযোগ্য নামগুলো ‘স্বাধীন পূর্ব বাংলা’, ‘বাংলা’, ‘বেঙ্গল’, ‘ইস্ট বেঙ্গল’, ‘বঙ্গ’, ‘বঙ্গ দেশ’। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘বাংলাদেশ’ নামটি উত্থাপন করেন। অধিকাংশ নেতাকর্মীই ‘বাংলাদেশ’ নামটি মেনে নেন।
৬ ডিসেম্বর বিভিন্ন পত্রিকায় ‘বাংলাদেশ’ নামকরণের খবর ছাপা হয়। ‘পাকিস্তান অবজার্ভার’-এ আতাউর রহমান খান, বঙ্গবন্ধুর এই নামকরণের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিবৃতি দেন। এছাড়া ন্যাপের মওলানা ভাসানী ৭ ডিসেম্বর এক জনসভায় বাংলাদেশ নামকরণ সমর্থন করে বলেন, ‘ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে ‘বাংলাদেশ’ নামকরণই হবে সঠিক এবং যথার্থ।’ তিনি যুক্তি দেন, ‘যেহেতু এক ইউনিট ভেঙে গেছে, তাই ‘বাংলাদেশ’ নামটি পুনরুজ্জীবিত হওয়া উচিত।’
তখন পর্যন্ত সরকারি নথিপত্রগুলোয় ‘পূর্ব পাকিস্তান’ লিখতে হলেও কেউ মুখে ‘পূর্ব পাকিস্তান’ বলতেন না। সবাই ‘বাংলাদেশ’ বলতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চে বঙ্গবন্ধু বেতারে তাঁর স্বাধীনতার ঘোষনাকালেও ‘বাংলাদেশ’ শব্দটি উল্লেখ করেছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধকালে গঠিত হওয়া অস্থায়ী মুজিবনগর সরকারের নানা ঘোষণাপত্রে ‘বাংলাদেশ’ ব্যবহৃত হয়। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১-দেশ স্বাধীন হলে সাংবিধানিকভাবে বাংলাদেশ নামকরণ হয়।
