হলিউড কিংবদন্তি ডায়ান কিটন আর নেই
বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩:০৯, ১২ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১৪:৩২, ১২ অক্টোবর ২০২৫

অস্কারজয়ী মার্কিন অভিনেত্রী ডায়ান কিটন আর নেই। ৭৯ বছর বয়সে ক্যালিফোর্নিয়ায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন এই প্রজন্মের অন্যতম প্রভাবশালী তারকা। ‘অ্যানি হল’-এর সেই প্রাণবন্ত, বুদ্ধিদীপ্ত নারী চরিত্রের মাধ্যমে যিনি বিশ্বজুড়ে দর্শকের মন জয় করেছিলেন, তিনি চলে গেলেন নীরবে।
ডায়ান কিটনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন তার বন্ধু ও প্রযোজক ডরি র্যাথ, মার্কিন গণমাধ্যম সিবিএস নিউজ-কে।
সোনালী যুগের সূচনা: ‘দ্য গডফাদার’ থেকে ‘অ্যানি হল’
লস অ্যাঞ্জেলেসে জন্ম নেওয়া কিটন ১৯৭০-এর দশকে খ্যাতি অর্জন করেন 'দ্য গডফাদার' সিরিজে কায় অ্যাডামস-কোরলিয়নের চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে। তবে তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় মাইলফলক আসে ১৯৭৭ সালের চলচ্চিত্র 'অ্যানি হল' দিয়ে।
উডি অ্যালেন পরিচালিত এই ছবির জন্য কিটন অস্কার, গোল্ডেন গ্লোব ও বাফটা—তিনটি মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারই জেতেন। এতে তার স্বাভাবিক, হাস্যরসাত্মক অথচ হৃদয়স্পর্শী অভিনয় তাকে 'সমকালীন নারীর' প্রতীকে পরিণত করে।
অভিনয় ও পরিচালনায় সমান মুন্সিয়ানা
পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি অভিনয় করেছেন অসংখ্য জনপ্রিয় ছবিতে — Father of the Bride, First Wives Club, Something’s Gotta Give, The Family Stone থেকে Summer Camp (২০২৪) পর্যন্ত।
অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি ছিলেন সফল পরিচালকও। তার পরিচালিত ডকুমেন্টারি Heaven (১৯৮৭) এবং Unstrung Heroes (১৯৯৫) সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েছিল। ২০০০ সালে Hanging Up ছবিতে তিনি একসঙ্গে ছিলেন পরিচালক ও অভিনেত্রী হিসেবে।
স্টাইল আইকন হিসেবে ডায়ান কিটন
তার স্টাইল ছিল স্বতন্ত্র — ঢিলেঢালা পুরুষালি পোশাক, টাই ও প্রশস্ত টুপিতে সাজানো এক ভিন্ন সৌন্দর্য। ফ্যাশন জগতে ‘ডায়ান কিটন স্টাইল’ আজও একটি অনুপ্রেরণার নাম।
বেট মিডলার, তার সহ-অভিনেত্রী লিখেছেন:
“অসাধারণ, সৎ ও অনন্য এক মানুষ ছিলেন ডায়ান। এমন এক হাস্যরস ও মানবিকতা তার মধ্যে ছিল, যা কাউকেই অনুকরণে সম্ভব নয়।”
গোল্ডি হন বলেছেন, “তিনি আলো ছড়ানো এক পরী ছিলেন, যিনি আমাদের জীবনে অমলিন স্মৃতি রেখে গেছেন।”
স্টিভ মার্টিন ও বেন স্টিলার তাকে স্মরণ করেছেন “চিরসবুজ প্রতিভা ও সত্যিকারের আইকন” হিসেবে।
ডায়ান কিটন একবার অস্কার জিতেছিলেন (Annie Hall), তবে আরও তিনবার মনোনয়ন পেয়েছিলেন — Reds (১৯৮১), Marvin’s Room (১৯৯৬), এবং Something’s Gotta Give (২০০৩)-এর জন্য।
কখনও বিয়ে করেননি কিটন। তবে দুই সন্তান—ডেক্সটার ও ডিউককে দত্তক নেন, যাদেরই তিনি জীবনের “সবচেয়ে বড় আনন্দ” বলেছিলেন। তার আত্মজীবনী Then Again (২০১১)-এ তিনি লিখেছিলেন: “আমি তখনই সুখী, যখন আমার প্রিয় মানুষগুলো সুখী থাকে, বড় বা ছোট কোনো কারণেই হোক।”
ডায়ান কিটনের মৃত্যুতে চলচ্চিত্র জগত হারাল এক বর্ণময় চরিত্র, এক অনন্য ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন এমন এক শিল্পী, যিনি অভিনয়, স্টাইল এবং মানবিকতার এক চিরন্তন প্রতীক হয়ে থাকবেন।