ইংল্যান্ডে বিশ্ববিদ্যালয় টিউশন ফি বাড়ছে: কঠোর মানদণ্ডে নির্ধারিত হবে বৃদ্ধি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮:৩৯, ২১ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১৮:৩৯, ২১ অক্টোবর ২০২৫

ইংল্যান্ডে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর টিউশন ফি মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাড়ানো হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত
ইংল্যান্ডে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর টিউশন ফি মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাড়ানো হচ্ছে। তবে সব প্রতিষ্ঠান এই সুযোগ পাবে না—শুধু তারাই ফি বাড়াতে পারবে, যারা সরকারের নির্ধারিত কঠোর মানদণ্ড পূরণ করবে। অর্থাৎ, উচ্চমানের পাঠদান, শিক্ষার্থীদের সার্বিক সহায়তা এবং ভালো ফল নিশ্চিত করতে পারলে তবেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বর্ধিত ফি গ্রহণ করতে পারবে।
দেশটির শিক্ষামন্ত্রী ব্রিজেট ফিলিপসন এমপিদের উদ্দেশে বলেন, “উচ্চশিক্ষা খাতকে একটি দৃঢ় আর্থিক ভিত্তির ওপর দাঁড় করানোই আমাদের লক্ষ্য। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া দুই শিক্ষাবর্ষে টিউশন ফি বৃদ্ধি কার্যকর হবে। এরপর প্রতি বছর স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফি সীমা বৃদ্ধির জন্য আইন প্রণয়ন করা হবে।”
ফিলিপসন জানিয়েছেন, জীবনযাত্রার ব্যয় ও মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রক্ষণাবেক্ষণ ঋণও প্রতিবছর স্বয়ংক্রিয়ভাবে বৃদ্ধি পাবে। সরকারের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত Post-16 Education and Skills White Paper-এর অংশ হিসেবে এই ঘোষণায় নতুন শিক্ষাগত যোগ্যতা ‘V-Level’ চালুর পরিকল্পনাও প্রকাশ করা হয়েছে, যা বিদ্যমান A-Level ও T-Level কোর্সের পরিপূরক হবে।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, “যদি কোনো বিশ্ববিদ্যালয় সর্বোচ্চ ফি নিতে চায়, তাহলে নিশ্চিত করতে হবে যে তারা সত্যিই বিশ্বমানের শিক্ষা দিচ্ছে। এসব সংস্কারের লক্ষ্য হলো মানসম্পন্ন শিক্ষা, অর্থের যথাযথ ব্যবহার এবং দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে মনোযোগ বৃদ্ধি করা।”
আট বছরে প্রথমবার ফি বৃদ্ধি
এ বছরের সেপ্টেম্বরেই আট বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো ফি বৃদ্ধি করে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক গড় ফি ৯,৫৩৫ পাউন্ডে উন্নীত করা হয়েছে। তবে, দেশের উচ্চশিক্ষা নিয়ন্ত্রক সংস্থা অফিস ফর স্টুডেন্টস (OfS) সতর্ক করেছে যে ৪৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠান আর্থিক সহায়তা না বাড়ালে ঘাটতির মুখে পড়বে।
ফিলিপসন বলেন, “যেসব প্রতিষ্ঠান শিক্ষার মান রক্ষা করতে ব্যর্থ হবে, তাদের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেশি বেতন বা ফি আদায়ের অনুমতি দেওয়া হবে না। বরং তারা আর্থিক ও নিয়ন্ত্রক পরিণতির মুখোমুখি হবে।”
ফ্র্যাঞ্চাইজিংয়ে কঠোর নজরদারি
সরকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ফ্র্যাঞ্চাইজিং ব্যবস্থার ওপরও কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপের ঘোষণা দিয়েছে—যেখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয় অন্য কোনো সংস্থাকে তার পক্ষ থেকে আংশিক বা পূর্ণ কোর্স পরিচালনার চুক্তি দেয়।
বিশ্ববিদ্যালয় খাতের স্বাগত
ইউনিভার্সিটিজ ইউকে-এর প্রধান নির্বাহী ভিভিয়েন স্টার্ন সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, “আজকের ঘোষণাটি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থার জন্য এক অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পুনর্গঠনের ইঙ্গিত দেয়। এটি প্রমাণ করে যে ইংল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত এক জাতীয় সম্পদ।”
অন্যদিকে, ওয়েস্টমিনস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পিটার উরউইন মন্তব্য করেছেন, “উচ্চশিক্ষা খাত সামাজিক গতিশীলতার মূল চালিকা শক্তি। সরকার এই দিকটি ঠিকভাবেই চিন্তা করছে।”
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান