২০৫০ সালে রোবট বউয়ের সাথে সংসার করবে পুরুষ
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪:৪৩, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ০৫:০২, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

২০৫০ সালে অনেক পুরুষ নারীর পরিবর্তে রোবট বউয়ের সাথে সংসার করবেন। কারণ ৭০ শতাংশ নারী, পুরুষকে সহযোগী মনে করেন না। তারা পুরুষকে প্রতিপক্ষ মনে করেন। এই কারণে নারী ও পুরুষের মধ্যে মানসিক দ্বন্দ্ব ও দূরত্ব বাড়ছে।
ডেইলি মেইল জানায়, ড. জয়েস বেনেনসন ও তার সহকর্মীদের পরিচালিত `জার্নাল অব সোশ্যাল সাইকোলজি’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। বিভিন্ন দেশের ৫০০০ নারী ও পুরুষের ওপর জরিপটি পরিচালিত হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুরুষের প্রতি বিদ্বেষের কারণেই অনেক নারী এখন একা থাকছেন। একইভাবে পুরুষও নারীর কাছ থেকে দূরে চলে যাচ্ছেন।
এই কারণে আর মাত্র ২৫ বছর পরই রোবট বউ খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। ইতোমধ্যেই রোবট নারী আবিষ্কৃত হয়েছে। অবিকল নারীদের মতো দেখতে এই রোবটগুলো মানুষের ডাকে সাড়াও দেয়। এটি পরিচালিত হয় অ্যাপের মাধ্যমে। মানুষের মতোই অনুভূতি আছে এই রোবটগুলোর। অস্বাভাবিকভাবে এগুলো এখন মূলধারার হয়ে উঠছে।
ইতোমধ্যেই রিডমি কোম্পানি আশ্চর্য এই রোবটের মডেল উন্মোচন করেছে। এটি একটি অদ্ভুত রোবট। এটি দূর থেকেও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
ব্লুটুথের মাধ্যমে এটি অ্যাপের সাথে সিঙ্ক করে, যেখানে নিয়ন্ত্রণে থাকা ব্যক্তি এটি পরিচালনা করতে পারে। খুব শিগগিরই এটি নারীর বিকল্প হয়ে উঠবে। এমনটাই আশা করছেন, রিডমির এক মুখপাত্র।
তিনি বলেছেন, ইন্টারেক্টিভ কথোপকথনে, এটি কীভাবে ফিট হতে পারে, তা নিয়ে আমরা খুব উত্তেজিত।
তিনি বলেছেন, অ্যাপ নিয়ন্ত্রিত এই রোবটের দাম একটু বেশি। তাদের কাছে এখন ২২ প্রকারের রোবট রয়েছে। এর যে কোনো একটির দাম ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা।
রোবটগুলোর ত্বকের রঙ, চুলের স্টাইল ও চোখের সৌন্দর্যও আলাদা। ক্রেতারা পছন্দমতো ডিজাইন দেখে কিনতে পারবেন।
এই রোবটে মুটুয়াফুন নামক একটি অ্যাপ ব্যবহার করা হয়েছে। এটি অ্যাপ স্টোর ও গুগল প্লে স্টোরেও পাওয়া যায়। ব্লুটুথের মাধ্যমে এটি রোবটের সাথে সংযুক্ত হয়।
এটি যেকোনো জায়গায় ও যেকোনো সময় বহন করা যাবে। এ ছাড়াও এর সার্ভিসের কোনো জুড়ি নেই। অ্যাপ স্টোরের বর্ণনায় এমনটিই লেখা আছে।
একবার রোবটটি অ্যাপের সাথে সিঙ্ক হয়ে গেলে ব্যবহারকারীদের একটি 'রুম' তৈরি করতে বলা হয়, যেখানে তারা সর্বোচ্চ ১০ জন সদস্যকে আমন্ত্রণ জানায় এবং সবাই একইসঙ্গে বট নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
রিডমি জানিয়েছে, এটি ১০টি মোডে পরিচালনা করা যাবে এবং যার যে মোড পছন্দ, সেই মোডই সিলেক্ট করতে পারবে।
রিডমি আশা করছে, রোবটটি সবার কাছে বন্ধু হিসেবে কাজ করবে। তবে সাইবার বিশেষজ্ঞরা রোবটগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
ইএসইটি-এর গ্লোবাল সাইবার সিকিউরিটি অ্যাডভাইজার জ্যাক মুর বলেছেন, যে উদ্দেশ্যেই এর ডিজাইন করা হোক না কেন, এই ধরনের ডিভাইসগুলোতে নিরাপত্তা বা গোপনীয়তার ত্রুটি তৈরি হওয়া ছাড়াও ক্ষতি ও ঝুঁকির কারণ হতে পারে।
বিশেষ করে ডেটা গোপনীয়তা এবং যে কোনো সফ্টওয়্যার দুর্বলতার মাধ্যমে হ্যাকিং করার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, এই ডিভাইসগুলোকে কাউকে ক্ষতি করার লক্ষ্যবস্তু করা যেতে পারে। কারণ এগুলো অত্যন্ত সংবেদনশীল ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। তাই এটি সঠিকভাবে সুরক্ষিত না হলে ব্যবহারকারীদের ব্ল্যাকমেইল করার জন্য ব্যবহার করা হতে পারে।
রোবটটিকে যেহেতু দূরবর্তীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তাই এর দুর্বল নিরাপত্তার সাথে ডিজাইন করা ডিভাইসের মতো বাড়ির ভেতরে নজরদারি সরঞ্জাম হিসাবেও ব্যবহার করতে পারে সুযোগসন্ধানীরা।
প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে সাথে নিত্যনতুন আবিষ্কার অব্যাহত আছে। এর বেশিরভাগই মানুষের কল্যাণে কাজে লাগছে। কিন্তু আমরা এমন কোনো প্রযুক্তি চাই না, যা মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ, দ্বন্দ্ব ও দূরত্ব তৈরি করে। তাই রোবট ব্যবহারের আগে ক্রেতাদের সতর্ক হওয়া জরুরি। কারণ এটি মানব সভ্যতা বিপন্ন করতে পারে।